(বাঁ দিক থেকে) রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং বন্ধন ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় অর্থনীতি এগোচ্ছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং মূল্যায়ন সংস্থার পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) বক্তব্য, এ বছর সারা বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধিতে এ দেশের অবদান হতে পারে ১৬ শতাংশের বেশি। তবে একই সঙ্গে তাদের মন্তব্য, আর্থিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের, তাকে স্পর্শ করা এখনও সম্ভব হয়নি। সেখানে পৌঁছতে হলে শ্রম ক্ষেত্রের সংস্কারে নজর দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, এক দিন আগে প্রায় একই পরামর্শ দিয়েছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। আজ বন্ধন ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষও বলেছেন, ভারতকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে গেলে মাথাপিছু আয় বাড়াতে হবে।
সম্প্রতি ভারত সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএমএফ। সেই প্রতিবেদন উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটিতে ভারতের মিশন নাদা চৌয়েইরি জানিয়েছেন, এ দেশের শ্রম ক্ষেত্রে আরও বেশি করে নজর দেওয়া দরকার। কাজের জোগানের তুলনায় তার খোঁজে থাকা মানুষের সংখ্যা বেশি। ফলে তাঁদের সম্ভাবনা অনুযায়ী কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এই বাধা পেরোতে শিক্ষা এবং কৌশল সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শ্রম বাহিনীতে বাড়াতে হবে মহিলাদের অংশগ্রহণ। তাতে অর্থনীতির অগ্রগতি হতে পারে দ্রুততর। উল্লেখ্য, মোদী সরকার আড়াই দশকের মধ্যে ভারত উন্নত রাষ্ট্র হয়ে উঠবে বলে বার্তা দিলেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন রাজন। বলেছেন, এখন দেশের ৩৫% মানুষ অপুষ্টির শিকার। আজ যে নাবালক অপুষ্ট, সে ১০ বছর পরে কর্মী বাহিনীতে যোগ দিলে কি দেশকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব?
আজ এক অনুষ্ঠানে চন্দ্রশেখরবাবুও বলেন, ‘‘ভারতকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি করতে গেলে মাথাপিছু আয় বাড়াতে হবে। রোজগার বাড়লে খরচের ক্ষমতা বাড়বে।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সরকারি হিসাবই বলছে, গত অর্থবর্ষে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল বছরে ৯৮,৩৭৪ টাকা। মাথাপিছু আয়, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য নিয়ে তৈরি বিশ্ব মানবসম্পদ সূচকে স্থান ছিল ১৩০। এই প্রেক্ষিতেই মানবসম্পদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।