টিসিএসের নিট লাভ ১১% বেড়ে হয়েছে ১০,৮৪৬ কোটি টাকা। প্রতীকী ছবি।
আমেরিকা এবং ব্রিটেন-সহ পশ্চিমের কিছু দেশে আরও সুদ বৃদ্ধির আশঙ্কা এবং মন্দাভাব প্রকট হওয়ায় মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার সেনসেক্স নেমেছে মোট ৭৮৯ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে জানা যায়, ডিসেম্বরে দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার কমে হয়েছে ৫.৭২%। নভেম্বরে ছিল ৫.৮৮%। এই নিয়ে টানা দু’মাস তা রইল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬% সহনসীমার নীচে। অন্য দিকে, নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে ৭.১% হারে। অক্টোবরে সঙ্কুচিত হয়েছিল ৪.২%। এই জোড়া সুখবরে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্কট নিয়ে আশঙ্কা কিছুটা ঝেড়ে ফেলে শুক্রবার ঘুরে দাঁড়ায় সূচক। সেনসেক্স ৩০৩ পয়েন্ট উঠে থামে ৬০,২৬১ অঙ্কে।
যদিও এটা মনে করার কারণ নেই যে, সুদ বৃদ্ধির পথ থেকে এখনই সরে আসবে আরবিআই। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি এখনও যথেষ্ট চড়া। তার উপর শীতে আনাজের মতো খাদ্যপণ্যের দাম কমে। ফলে আগামী দিনে তা ফের বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকছেই। সুদের হার তাই আরও কিছুটা বাড়াতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণ কমিটি। ৬-৮ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসবে তারা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, অন্যান্য দেশের থেকে ভারতের পরিস্থিতি ভাল। তবে বিশ্ব অর্থনীতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে রাশ আলগা করলে চলবে না। বিশেষত দেশে বেকারত্ব যেহেতু চড়া। বহু সংস্থায় নিয়োগ থমকে। অ্যামাজ়ন, মেটা, গুগ্ল-সহ বড় মাপের কিছু আমেরিকান সংস্থার কর্মী সঙ্কোচনের আঁচও পড়ছে। ইউরোপ, আমেরিকায় মন্দা এলে মার খেতে পারে রফতানি। যা ইতিমধ্যেই শ্লথ হয়েছে। এতেও কাজ হারাতে পারেন অনেকে। অর্থাৎ অবস্থা তেমন স্বস্তিজনক নয়। যে কারণে অস্থির থাকতে পারে শেয়ার বাজার।
সামনেই কেন্দ্রীয় বাজেট। আশা, কর্মসংস্থানে জোর দেওয়া হবে সেখানে। বাড়ানো হবে পরিকাঠামোয় লগ্নি। সেখানে সরকার খরচ বাড়ালে দেশে কাজ তৈরি হবে। বেকারত্ব কমবে। বাড়বে সিমেন্ট, ইস্পাতের চাহিদা। ভবিষ্যতে বাজারের অভিমুখ কোন দিকে থাকবে, তার অনেকটাই নির্ভর করবে সংস্থার আর্থিক ফল, বাজেট, বিশ্ব বাজারের অবস্থা এবং বিদেশি লগ্নি আসার উপরে।
অক্টোবর-ডিসেম্বরের আর্থিক ফল বেরিয়েছে কিছু সংস্থার। টিসিএসের নিট লাভ ১১% বেড়ে হয়েছে ১০,৮৪৬ কোটি টাকা। ইনফোসিসেরও বেড়েছে, হয়েছে ৬৫৮৬ কোটি, উইপ্রোর ৩০৫২ কোটি টাকা। তা প্রায় ১৯% বেড়েছে এইচসিএল টেকনোলজ়িসের। নিট মুনাফা ১৮.৫% বেড়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কেরও। শেয়ার পিছু ৭৫ টাকা ডিভিডেন্ড দেবে টিসিএস।
(মতামত ব্যক্তিগত)