কিশোর মারিওয়ালা, প্রাক্তন ডিরেক্টর, ম্যারিকো
রাজনৈতিক বৃত্তের অশান্তি ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও উত্তাপ চড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুততম বৃদ্ধির উন্নয়নশীল দেশের সম্পর্কে কী বার্তা যাচ্ছে অন্য দেশের সাধারণ মানুষের কাছে? একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে শিল্পপতি কিশোর মারিওয়ালার। ফেসবুকে সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন তিনি।
সম্প্রতি বর্ষীয়ান এই শিল্পপতি তাইল্যান্ডের ফুকেতে গিয়েছিলেন ইয়টে চেপে সপ্তাহখানেকের ছুটি কাটাতে। সেখানে পর্যটন সংস্থার অফিসে ইয়ট ভাড়া করতে গিয়ে ওই অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। কাগজপত্র দেখার পরে রিসেপশনিস্টের প্রশ্ন, ‘‘স্যর, আপনি তো ভারত থেকে এসেছেন। আপনি কি হিন্দু?’’
ইয়টে ভ্রমণের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক কী! জানতে চাওয়ায় অফিসের ম্যানেজারকে ডাকেন রিসেপশনিস্ট। স্থানীয় ভাষায় দু’জনের মধ্যে কিছু ক্ষণ কথাবার্তা চলে। তার পরে ম্যানেজার মারিওয়ালাকে জানান, বেশির ভাগ ইয়ট বেরিয়ে গিয়েছে। রয়েছে মাত্র একটি। তার স্কিপার মুসলিম। তাতে সমস্যা হবে না তো? এ বার শিল্পপতির আরও অবাক হওয়ার পালা। ম্যানেজারের বক্তব্য, ‘‘আমরা খবরের কাগজে পড়েছি যে, হিন্দুরা মুসলিমদের অপছন্দ করেন। সেই জন্যই আমরা উদ্বিগ্ন।’’
মারিওয়ালা ওই ম্যানেজারকে জানান, এমন ধারণা ঠিক নয়। শুধু তিনি নন, অধিকাংশ সংস্কৃতিমান হিন্দুই এমন নন। পোস্টের শেষে মারিওয়ালা লিখছেন, ‘‘বিদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে কি আমাদের ভাবমূর্তি এমন? আমি সত্যিই লজ্জিত।’’
‘‘আমি বর্ণনাতীত রকম লজ্জিত। অধিকাংশ সংস্কৃতিমান হিন্দুরই ব্যবহার এমন নয়।... বিদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে কি আমাদের ভাবমূর্তি এমনই? আমি সত্যিই লজ্জিত।’’
দেশের আর্থিক অগ্রগতি আহামরি কিছু নয়। তার উপরে সামাজিক বৃত্তের উত্তাপ। এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহল। ইদানীং শিল্পপতিরাও। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিল্পপতি আনন্দ মহীন্দ্রা। এ বার নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন কিশোর মারিওয়ালা।