উপভোক্তা স্তর থেকে বিল আদায় করে ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। ফাইল ছবি
দেশের গ্রামাঞ্চলে দৈনিক গড় বিদ্যুৎ সরবরাহের সময় ২২.৫ ঘণ্টায় পৌঁছেছে বলে দাবি কেন্দ্রের। চেষ্টা চলছে অবশিষ্ট ফারাকটুকু ভরার। পাশাপাশি সমস্ত গ্রামে নলবাহিত পরিস্রুত জলও পৌঁছনোর প্রকল্প নিয়েছে সরকার। পাম্প চালিয়ে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিতেও বিদ্যুৎ লাগে। অথচ এই জোড়া চাহিদার ঠেলায় আর্থিক চাপ বাড়ছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের উপরে। কারণ, উপভোক্তা স্তর থেকে বিল আদায় করে ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। মূল কারণ গ্রাহকদের আর্থিক সঙ্কট।
যেমন মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলার পাচদোঙ্গরি গ্রাম। বেশির ভাগ মানুষই জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত। জুলাইয়ে কেন্দ্রের ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পে নলবাহিত জল আসতে শুরু করেছিল সেখানে। কিন্তু পাঁচ মাসে পঞ্চায়েতের প্রায় ৫২,০০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযোগ, বাধ্য হয়ে কুয়োর জল পান করার ফলে গ্রামে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু হয় পাঁচ জনের।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, পাচদোঙ্গরি একটা উদাহরণ মাত্র। বিভিন্ন গ্রামেই সাধারণ মানুষের একাংশের পক্ষে বিদ্যুতের খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। পঞ্চায়েতেরও যথেষ্ট আয় নেই। ফলে বিল বকেয়া পড়ছে তাদেরও। আর দেশ জুড়ে বিপুল বকেয়ার চাপ পড়ছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির উপর। বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলিকে মাসের পর মাস বকেয়া মেটাতে পারছে না তারা। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ খরচের এই আর্থিক শৃঙ্খল বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন কোণে। দেশে বণ্টন সংস্থাগুলির কাছে উৎপাদন সংস্থাগুলির পাওনা ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
ডিসেম্বরে মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্রাহকদের স্পষ্ট জানিয়েছে, বিল না মেটালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। সংস্থার সিএমডি বিজয় সিঙ্ঘল বলেন, ‘‘আমরাও এই বিদ্যুৎ নিখরচায় পাচ্ছি না।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্বেগ, বকেয়ার ঠেলায় যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয় তা হলে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন ও জল জীবন মিশন প্রকল্পও ধাক্কা খাবে।