প্রতীকী ছবি।
বাজেটের হাত ধরে নতুন করে শুরু হওয়া দৌড় বহাল শেয়ার বাজারের। বাজেটের দিন সেনসেক্স উঠেছিল ২৩১৫ পয়েন্ট (৫%)। পরের চার দিনে উঠেছে ২১৩১। অর্থাৎ পাঁচ দিনে মোট উত্থান ৪৪৪৬ পয়েন্ট। শুক্রবার সূচকটি থামে ৫০,৭৩২ পয়েন্টে। তবে ততক্ষণে দিনের মাঝে ৫১ হাজারও ছুঁয়ে এসেছে সূচকটি। নিফ্টিও এই প্রথম ১৫ হাজার স্পর্শ করে নেমে এসে থিতু হয়েছে ১৪,৯২৪ অঙ্কে। বিএসই-তে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট বাজার দর প্রথম বারের জন্য ছুঁয়েছে ২০০ লক্ষ কোটি টাকা। বেজায় খুশি শেয়ার এবং শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের লগ্নিকারীরা।
এই উত্থানের অন্যতম কারণ বাজেটে বিলগ্নিকরণ, বিমায় ৭৪% বিদেশি লগ্নির দরজা খোলা, পরিকাঠামো-স্বাস্থ্যে বিপুল সরকারি বরাদ্দের মতো ঘোষণা। লগ্নিকারীদের মতে, এ সবের জেরে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে। জিএসটি আদায় বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয়, দেশে ব্যবসায়িক কারবার বাড়ছে। অনুমান, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিডিপি বাড়তে পারে ১০.৫%-১১%। অক্টোবর-ডিসেম্বরে সংস্থাগুলির ফলও মোটের উপর ভাল। দেশে করোনার প্রকোপ কমেছে। চলছে প্রতিষেধক দেওয়া। এই সব কারণে বাজারের এখন চাঙ্গা থাকারই কথা। তবে এত উঁচু বাজারে লগ্নিকারীরা লাভ ঘরে তুলতে নামতে পারেন। ফলে সংশোধনের আশঙ্কাও থাকছে। উদ্বেগ একটাই, একলপ্তে কতটা পড়বে সূচক!
শুক্রবারের ঋণনীতি বৈঠকে রেপো রেট (যে সুদে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) বদলায়নি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে আশ্বাস দিয়েছে, সুদ না-কমলেও বাজারে টাকার জোগানে ঘাটতি হবে না। তার উপরে সরকারি ঋণপত্রে খুচরো লগ্নিকারীদের বিনিয়োগের পথও খুলে দিয়েছে আরবিআই। সে জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে লগ্নিকারীদের। ফলে সুদ কমানো না-হলেও সব মিলিয়ে এ বারের ঋণনীতি পছন্দ হয়েছে বাজারের।
তবে রাজকোষ ঘাটতি সামলাতে বাজার থেকে মোটা ঋণ করতে হবে কেন্দ্রকে। বছরের বাকি সময়ের জন্য এই পথে সংগ্রহ করতে হবে ৮০,০০০ কোটি টাকা। বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী অর্থবর্ষে ঘাটতি দাঁড়াবে ১২ লক্ষ কোটি। যার অনেকটাই মেটানো হবে বাজার থেকে নেওয়া ঋণ মারফত। এই প্রস্তাবে বেশ মুষড়ে পড়ে বন্ড বাজার। বিরাট মাপের সরকারি বন্ড বাজার থেকে শুষে নেবে বিপুল নগদ টাকা। এই আশঙ্কায় বন্ডের বাজারদর নামছে। ফলে বাড়ছে তার ইল্ড। ঋণপত্র নির্ভর অনেক ফান্ডের ন্যাভ কমেছে। ধাক্কা খেয়েছে ডেট ফান্ড এবং ব্যালান্সড ফান্ডগুলি।
(মতামত ব্যক্তিগত)