প্রতীকী ছবি
অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে অনেক কথা বলা হচ্ছে বটে, কিন্তু কোভিড-১৯ প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সঙ্কট। অথচ আত্মনির্ভর ভারত বা অন্য কোনও প্যাকেজে স্বাস্থ্য খাতের কথা এক বর্ণও বলা হয়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অর্থনীতিবিদেরা। শনিবার স্টেট ব্যাঙ্কের ওয়েবিনারে তাঁদের একাংশের বক্তব্য, অর্থনীতির সমস্যার মোকাবিলা করতে হলে স্বাস্থ্যের সমস্যায় নজর দিতেই হবে। বাড়াতে হবে অউ খাতে বরাদ্দ ও বিনিয়োগ। ক’দিন আগে বণিকসভা সিআইআই কেন্দ্রের কাছে তাদের দাবিসনদে ঠিক যে আর্জি জানিয়েছিল। লক্ষ্যণীয় ভাবে মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যনও শিল্পের সঙ্গে আলোচনায় একই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, স্বাস্থ্যে লগ্নির নতুন পথ খুলতে হবে শিল্প মহলকেও।
এ দিনের সভায় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত রোহিনী পাণ্ডে বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্য থেকে তৈরি হওয়া সঙ্কট। অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে হলে স্বাস্থ্যের বিষয়টি আগে দেখতে হবে।’’ ভারতে যে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বরাবরই কম ও বহু আলোচনা সত্ত্বেও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি সে কথাও স্মরণ করান তিনি। বলেন, ‘‘আত্মনির্ভর ভারত ও অন্য প্যাকেজ নিয়ে কথা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে লগ্নি কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে কোথাও কথা নেই। যা উদ্বেগের বিষয়।’’ এই কথার সূত্র ধরেই স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সৌম্যকান্তি ঘোষ বলেছেন, করোনা সঙ্কটকেই সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। বাড়ানো যেতে পারে স্বাস্থ্যে লগ্নি। তাঁর পরামর্শ, দু’বছরে ৬০,০০০ কোটি টাকার খরচ করে ২৫০টি জেলায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল গড়ার পরিকল্পনা তৈরি করা হোক।
আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুন জয়দেবের বক্তব্য, চিকিৎসা পরিকাঠামোর সমস্যা বৃহত্তর অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্যের এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারলে তবেই অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের উৎসাহ আরও বাড়বে। বস্তুত, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সুফল সমাজের সর্বস্তরে ঠিক ভাবে না-পৌঁছনোও আর্থিক ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মন্তব্য তাঁর। বলেছেন, ‘‘থাকার ভাল জায়গা নেই বলেই শুধু যে বহু পরিযায়ী শ্রমিকের কাজের জায়গায় ফিরতে চাইছেন না তা নয়। বরং তাঁরা স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা ও করোনার প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের মধ্যে বস্তি-মুক্ত ভারত গড়ার কথা বলেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির ডিরেক্টর রথীন রায়। বিষয়টি নিয়ে অর্থনীতিবিদ, নীতি নির্ধারকেরা কেউই তেমন কিছু না-বলায় হতাশ তিনি। এই নীরবতা নিয়ে অর্জুনের মন্তব্য, ‘‘দেড়
লক্ষ শিশু ও যক্ষ্মা রোগে পাঁচ লক্ষ মানুষের মৃত্যুতে বিস্মিত হই না। টনক নড়ে করোনার মতো সঙ্কট এলে।’’