ভোট দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করলেই শিকেয় ওঠে সংস্কার। অর্থনীতির দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়নের স্বার্থে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলে বরং তখন আমজনতার মন ভেজানোর নানা প্রকল্প বেরোয় সরকারের ঝুলি থেকে। এ দেশে চিরকালের চেনা সেই ছবি এ বার পাল্টাতে জোরদার সওয়াল করল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)। পরামর্শ দিল, ভরা ভোট মরসুমেও সংস্কার এবং বৃদ্ধিকেই পাখির চোখ করে রাখতে।
আগামী এক বছরে একের পর এক নির্বাচন ভারতে। কর্নাটক, মিজোরাম, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে বিধানসভা ভোট তো আছেই। ইতিমধ্যেই ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেরও। আইএমএফের এই মন্তব্য তাই তাৎপর্যপূর্ণ।
আইএমএফের এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের ডিরেক্টর চ্যাংইয়ং রী বলেন, ‘‘আমরা বলছি না যে, ভোটের জন্য ভারতের সংস্কারের গতি শ্লথ হবেই। শুধু বলতে চাইছি, ভোটের ভরা সময়েও কাঠামোগত সংস্কার এবং তার হাত ধরে বৃদ্ধির গতি বজায় থাকাই উচিত।’’ অর্থাৎ, সরাসরি না বলেও, নির্বাচনের মুখে সংস্কারের কড়া দাওয়াই ছেড়ে জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণার প্রবণতা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবারই ভারতের প্রশংসা করে আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি এমডি ডেভিড লিপ্টন বলেছিলেন, সংস্কারের সুফল ইতিমধ্যেই পৌঁছতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের দরজায়। তাঁর মতে, যে ভাবে বিস্তর বাধা টপকে শেষমেশ জিএসটি চালু করা হয়েছে বা হাঁটা হয়েছে সংস্কারের রাস্তায়, তা কৃতিত্বের দাবি রাখে। এর সুফল হিসেবেই এই আর্থিক বছরে ৭.৪% বৃদ্ধির দরজায় কড়া নাড়ার জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারত। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্বে অন্যতম আর্থিক শক্তি হিসেবে উঠে আসার জন্য ওই সংস্কারের ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হতে হবে ভারতকে।