ই-অ্যাসেসমেন্ট স্কিম আনার কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র
বিভিন্ন মহল থেকে কর-সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠার পরেই সতর্ক হয়েছিল কেন্দ্র। বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, রিটার্ন যাচাই-সহ আয়কর সংক্রান্ত কোনও ব্যাপারে যাতে করদাতা ও অফিসারদের মুখোমুখি যোগাযোগ না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। গত অর্থবর্ষের বাজেটে যে কথা বলেছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। সেই কাজেই এ বার কোমর বেঁধে নামল কেন্দ্র। অনেকের মতে, একেই অর্থনীতি ধুঁকছে। তার উপরে কর হেনস্থার অভিযোগ জানাচ্ছে শিল্পের একাংশ। এই অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে করদাতার মন পেতে মরিয়া সরকার।
শুক্রবার সেই মতোই প্রযুক্তি নির্ভর ই-অ্যাসেসমেন্ট স্কিম আনার কথা ঘোষণা করে পরিচয়হীন কর যাচাইয়ের রাস্তায় প্রথম পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। অর্থাৎ এর আওতায় করদাতার পরিচয় জানবেন না অফিসার। জানবেন শুধু নম্বর। তার ভিত্তিতেই চলবে পুরো প্রক্রিয়া। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিজয়া দশমীর দিন ৮টি অঞ্চলে প্রকল্প পরীক্ষামূলক চালু হলেও, পরে তা সারা দেশে চালু হবে।
আয়কর রিটার্নে অসঙ্গতি ধরা পড়লে তা বিশদে জানিয়ে করদাতাকে নোটিস পাঠাবে ওই প্রকল্পের আওতায় তৈরি জাতীয় ই-অ্যাসেসমেন্ট কেন্দ্র। করদাতা যে রাজ্যের বা অঞ্চলের, তার বাইরের কোনও অঞ্চলের অফিসারের উপর দেওয়া হবে তাঁর কর সংক্রান্ত তদন্তের ভার।
নতুন কী?
• করদাতাদের সরাসরি বিজ্ঞপ্তি পাঠাবেন না আয়কর অফিসার।
• রিটার্ন যাচাই-সহ আয়কর সংক্রান্ত সব কাজ হবে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক।
• এ জন্য ৮ অক্টোবর চালু হবে ই-অ্যাসেসমেন্ট স্কিম।
• পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হবে কলকাতা-সহ ৮টি আঞ্চলিক দফতরে।
• এই প্রকল্পের আওতায় খুলবে জাতীয় ই-অ্যাসেসমেন্ট কেন্দ্র।
• রিটার্নে অসঙ্গতি পেলে ওই কেন্দ্রই নোটিস পাঠাবে করদাতাকে।
• তদন্তের প্রয়োজন হলে কেন্দ্র ১৫ দিনের মধ্যে আয়কর অফিসারকে সেই দায়িত্ব দেবে। তবে ব্যবস্থা এমন হবে, যাতে করদাতা ও ওই অফিসারের মধ্যে যোগাযোগের সুযোগ না থাকে। করদাতার পরিচয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে আইডেন্টিফিকেশন কোড।
• চাইলে আপাতত থাকা যাবে পুরনো ব্যবস্থায়। পরে সকলের জন্য এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক হবে।
তদন্তকারী অফিসার তাঁর রিপোর্টও পঠাবেন ওই ই-অ্যাসেসমেন্ট কেন্দ্রেই। সেখান থেকে বেরোবে চূড়ান্ত রায়।সম্প্রতি নির্মলা বলেছেন, কিছু অফিসারের জন্য আয়কর দফতরের বদনাম হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে যোগসাজশে অনেক করদাতা ন্যায্য কর না দিয়েই পার পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে ‘খুশি’ করার চলও রয়েছে বলে খবর। অর্থমন্ত্রীর দাবি, প্রযুক্তির হাত ধরে কর-দুর্নীতি দূর করা এই ব্যবস্থার লক্ষ্য।