ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি বকেয়া আদায়ে সমস্যায় পড়ছে। প্রতীকী ছবি।
দেশ জুড়ে ফের মাত্রা ছাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিন এতে আক্রান্ত হচ্ছেন সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ। জারি হচ্ছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ। ধাক্কা খাচ্ছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। এ জেরে ফের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি বকেয়া আদায়ে সমস্যায় পড়তে পারে বলে মনে করছে রেটিং সংস্থা ইক্রা। যাদের বেশিরভাগই ছোট-মাঝারি শিল্পকে ঋণ দেয়। শুধু মূল্যায়ন সংস্থাটি নয়, একই আশঙ্কা জানাচ্ছেন ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলির কর্তারাও।
ইক্রার মতে, করোনা সমস্যা যুঝতে বিভিন্ন রাজ্য ইতিমধ্যেই আংশিক লকডাউনের পথে হেঁটেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের একটা বড় অংশের আয় কমার সম্ভাবনা। যা হলে তাঁদের ঋণ শোধে সমস্যা দেখা দেবে। সেই প্রভাব গিয়ে পড়বে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি হিসেবের খাতায়। সব মিলিয়ে এপ্রিলেই ৮%-১০% ঋণ আদায় কমেছে বলে জানাচ্ছে তারা। কিছু রাজ্য অবশ্য ক্ষুদ্রঋণকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ইক্রার ধারণা, করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে কঠিন সময় অপেক্ষা করে রয়েছে এই শিল্পের সামনে।
একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলিও। রাজ্যের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা সম্পূর্ণা মাইক্রো ফিনান্সের এমডি অভিজিৎ বেরা বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই আমাদের গ্রাহক। লকডাইন ওঠার পরে তাঁরা কাজে ফিরেছিলেন। কিন্তু এখন আবার লকডাউনের আশঙ্কায় তাঁরা ঘরমুখো। এতে রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে ঋণ শোধেও সমস্যায় পড়বেন তাঁরা।’’ এ ছাড়াও ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় এই সব ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা। বিভিন্ন রাজ্য দোকান খোলা রাখার সময় বেঁধে দেওয়ায় ইতিমধ্যেই তাঁদের আয় কমছে। পুরো লকডাউন ঘোষণা হলে তা পুরোপুরি বন্ধ হবে। ফলে ঋণ বকেয়া পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। অনেকে আবার খরচ না-করে সামান্য রোজগার ধরে রাখছেন বলেও জানাচ্ছেন তিনি।
তবে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ধার শোধের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয় নেই এই শিল্পের। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বড় ভরসা সেটাই। অবস্থার একটু উন্নতি হলেই গ্রাহকেরা যে ঋণ মেটাতে শুরু করবেন এবং সংস্থাগুলিও তাদের সমস্যা কাটিয়ে উঠবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।’’