ফাইল চিত্র।
একলপ্তে ১৭০৮ পয়েন্ট পতন এবং সেনসেক্সের বহু দিন বাদে ফের ৪৭ হাজারের ঘরে প্রত্যাবর্তন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের এমনই এক ‘কালো’ সোমবারের সাক্ষী রইল শেয়ার বাজার। নতুন করে নজিরবিহীন হারে বাড়তে থাকা সংক্রমণ শেষ পর্যন্ত অর্থনীতির ধীরে ধীরে ফিরে পেতে থাকা শ্বাসটুকু ফের কেড়ে নেবে কি না, সেই প্রশ্ন ঘিরে দ্বিমত থাকলেও বাজার সন্ত্রস্ত। অনিশ্চয়তায় এ দিন কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিএসই থেকে উধাও হয়েছে ৮.৭৭ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। ৩.৪৪% খুইয়ে ৪৭,৮৮৩.৩৮ অঙ্কে ফিরেছে সেনসেক্স। নিফ্টি ৫২৪ (৩.৫৩%) নেমে ১৪,৩১০.৮০-তে। এ দিনই বেরিয়েছে শিল্পোৎপাদন এবং মূল্যবৃদ্ধির হিসেব। তার আগে দিনভর এ নিয়েও উদ্বেগে ছিলেন লগ্নিকারীরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিষেধক বাজারে এলেই সঙ্কটের ফাঁস আলগা হয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে, এই আশায় নাগাড়ে উঠে ৫০ হাজারের মাইলফলক পেরিয়েছিল সেনসেক্স। কিন্তু আচমকাই তাতে প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলেছে। উল্টে সন্দেহ, সংক্রমণ রুখতে ফের লকডাউন হবে না তো! সেটা হলে, ব্যবসা-বাণিজ্য যেটুকু ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সেটুকু ফের হারাতে পারে, মনে করছেন লগ্নিকারীরা। বাজার মহলের দাবি, কেন্দ্র ফের পূর্ণাঙ্গ লকডাউন হবে না বললেও, বিভিন্ন রাজ্যে সেই ভয় বাড়ছে। তাই এ দিন শেয়ার বেচে মুনাফা তুলেছেন অনেকে। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় আগরওয়াল বলেন, ‘‘শেয়ারের দাম এমনিতে চড়াই ছিল। ফলে মুনাফা তোলার তাগিদে তা পড়তই। অতিমারির অনিশ্চয়তা তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে। এই সংশয় আগামী দিনে বাড়তে পারে। আরও পতন দেখতে পারে সূচক।’’
এ দিন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতে ১৭৪৬.৪৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। তবে ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি ২৩২.৭৬ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। বাজার বিশেষজ্ঞ বিধান দুগার বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের লকডাউন কত দিন চলবে জানা নেই। এটাই বাজারে অনিশ্চিয়তা বাড়াচ্ছে। বরং নির্দিষ্ট দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা হলে এত সংশয় আর ভয় থাকত না।’’
যদিও দেকো সিকিউরিটিজের কর্ণধার অজিত দে-র মতে এ দিনের ধস লগ্নিকারীদের অযথা আতঙ্কের ফল। তাঁর দাবি, ‘‘কোভিডের প্রথম ঝাপটার সময়ে দেশ অপ্রস্তুত ছিল। এখন মোকাবিলায় তৈরি। ফলে আতঙ্কের কারণ নেই। শুধু ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের আপাতত বাজারে সাবধানে পা ফেলতে হবে।’’