ব্যবসার কোন কোন ক্ষেত্র থেকে আয়ের উপরে (অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ বা এজিআর) টেলিকম সংস্থাগুলিকে স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি গুনতে হবে, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে টেলিকম দফতরের (ডট) যুক্তিকেই গত অক্টোবরে মান্যতা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই হিসেবে ডট সংস্থাগুলিকে বকেয়ার অঙ্ক জানালেও সংস্থাগুলির বক্তব্য, এ ব্যাপারে তাদের নিজস্ব যুক্তি রয়েছে। এ বার সংস্থাগুলিকে তাদের নিজস্ব সেই হিসেবের সঙ্গে উপযুক্ত নথি জমা দিতে বলল ডট।
গত অক্টোবরেই সংস্থাগুলিকে তাদের বকেয়া তিন মাসের মধ্যে মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তা না-মেটানোয় এ মাসে শীর্ষ আদালতের তোপের মুখে পড়ে টেলি শিল্প এবং কেন্দ্র। এখন অবশ্য ধাপে ধাপে সংস্থাগুলি বকেয়া মেটাতে শুরু করেছে। সোমবার ডটের এক সূত্র জানিয়েছে, তাদের হিসেবের সঙ্গে সংস্থাগুলির মূল্যায়নের ফারাক হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই নথি চাওয়া হয়েছে। তবে যারা ডটের হিসেব অনুযায়ী চলবে, তাদের নথি দিতে হবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই যাতে বকেয়ার হিসেব কষা হয়, তা নিশ্চিত করাও ডটের লক্ষ্য।
এই অবস্থায় গোটা টেলিকম শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েই বাজারে জল্পনা তৈরি হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলির দেওয়া ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হবে কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দানা বাঁধছে। স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার এ দিন বলেন, ‘‘টেলিকম শিল্প ধ্বংস হোক, তা কেউই চায় না।’’
এই সঙ্কটের মধ্যেই এ দিনই ইন্দাস টাওয়ার্সের সঙ্গে সংযুক্তির সময়সীমা দু’মাস পিছিয়ে দিয়েছে ভারতী ইনফ্রাটেল। নতুন সময়সীমা ২৪ এপ্রিল। তবে এজিআর সঙ্কটের পরিস্থিতি দেখেই সংস্থার পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
টেলিকম ক্ষেত্রের বাইরেও বেশ কয়েকটি সংস্থার কাছে বকেয়া দাবি করেছে ডট। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত গেলের কাছে ১.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা দাবি করেছে তারা। এই নিয়ে নতুন করে কিছু না-বললেও, ২০১৭-১৮ সালের জন্য ৭৬০৮ কোটি টাকা চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে ডট। তাদের দাবি, দেরিতে টাকা দেওয়ার জন্য জরিমানার অঙ্ক এটি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও গেলের সিএমডি মনোজ জৈন জানান, তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন।