অবাধ বাণিজ্যে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু সেই বাণিজ্যকে হতে হবে আক্ষরিক অর্থেই মুক্ত। দু’তরফের কাছেই একই রকম লাভজনক। আমেরিকাকে ‘ঠকিয়ে’ অন্য কোনও দেশ একতরফা ভাবে বাণিজ্যে লাভ করে গেলে যে তিনি মেনে নেবেন না, ফের সেই হুঙ্কার ছাড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে এই সত্যিকারের অবাধ বাণিজ্য নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সমেত আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলিতে একেবারে আমূল সংস্কার চান তিনি। যারা আমেরিকার সঙ্গে ‘ন্যায্য ব্যবহার’ করেনি বলে ট্রাম্পের ধারণা।
আমেরিকা-চিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে মার্কিন মুলুকের বিপুল বাণিজ্য ঘাটতির (অন্তত ৩৭ হাজার কোটি ডলার) কথা আগেই তুলেছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে বিঁধেছিলেন বেজিংকে। এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলির সঙ্গেও সেই একই সমস্যার কথা তুললেন তিনি।
ট্রাম্পের কথায়, ‘‘বন্ধু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে স্বচ্ছতা থাকা উচিত। বাণিজ্য হওয়া উচিত সত্যিকারেই দ্বিপাক্ষিক। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি অবিশ্বাস্য। ১৫,১০০ কোটি ডলার! যার মধ্যে ৫ হাজার কোটি ডলার শুধু গাড়ি এবং তার যন্ত্রাংশে।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, এ নিয়ে ইউরোপের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তিনি তৈরি।
উল্লেখ্য, এর আগে বেজিংয়ের সঙ্গেও বাণিজ্য যুদ্ধে সামান্যতম জমি ছাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডার্সের স্পষ্ট ঘোষণা ছিল, যত দিন চিন তাদের অনৈতিক বাণিজ্য নীতি থেকে সরে না আসে এবং মেধাস্বত্বের (পেটেন্ট) নিয়ম মানার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা না দেখায়, তত দিন এই লড়াইয়ে ক্ষান্ত দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। বেজিংয়ের পাল্টা দাবি ছিল, তারাও লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়তে তৈরি।
পরিস্থিতি এতটাই রুখো আর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, এমনকী বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতি চিনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। প্রশ্ন তোলেন, কেন বিশ্বের অন্যতম বড় আর্থিক শক্তি হওয়া সত্ত্বেও সেখানে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে চিন? এই পরিস্থিতিতে এ বার ইইউকে কেন্দ্র করেও ফের ডব্লিউটিও-কে নিশানা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ডাক দিলেন প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান সংস্কারের।