রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। —ফাইল চিত্র।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ২০২২-২৩ সালে সরকারের হাতে ডিভিডেন্ড হিসাবে ৮৭,৪১৬ কোটি টাকা তুলে দিয়েছিল। গত অর্থবর্ষের জন্য সেই অঙ্ক প্রায় ১৪১% বাড়াল তারা। যা কার্যত চমকে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলকে। বুধবার শীর্ষ ব্যাঙ্ক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, তাদের কেন্দ্রীয় পর্ষদ উদ্বৃত্ত ভাঁড়ারের ভাগ হিসেবে সরকারকে ২,১০,৮৭৪ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। এই অঙ্ক নজিরবিহীন। সরকারের প্রত্যাশার থেকেও অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এতে নতুন সরকারকে আয় বাড়ানোর সুবিধা পাবে। চাইলে খরচও কিছুটা বাড়াতে পারবে। কমাতে পারবে রাজকোষ ঘাটতি।
এ বছর অন্তর্বর্তী বাজেটে কেন্দ্রের অনুমান ছিল, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড খাতে ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা আয় হতে পারে তাদের। বাস্তবে তা হতে চলেছে প্রায় ১.০৮ লক্ষ কোটি বেশি। আরবিআই জানিয়েছে, কেন্দ্রকে তহবিল হস্তান্তরের অঙ্ক ঠিক করতে গোটা বিশ্বের আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে পর্ষদ। পর্যালোচনা করেছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত ঝুঁকিগুলিও। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত অর্থনীতিতে কোভিডের ধাক্কা বিচার করে আরবিআই আচমকা তৈরি হওয়া ঝুঁকি সামাল দেওয়ার জন্য তাদের ভাঁড়ারে থাকা মোট সম্পদের বাড়তি যে অংশ সরিয়ে রাখে, সেই তহবিল (কন্টিনজেন্ট রিস্ক বাফার) ৫.৫০ শতাংশে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০২২-২৩ সালে তা ৬% করা হয়। গত অর্থবর্ষে হয়েছে ৬.৫০%। তার পরে সেই অনুসারে সরকারকে ভাগ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮-এ কেন্দ্রকে উদ্বৃত্ত ভাঁড়ারের এই ভাগ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, বেশি টাকা দেওয়ার জন্য সরকারের তরফে চাপ দেওয়া হয়েছে। দেশের ঝুঁকি সামলানোর তহবিল সরকার আয় বাড়াতে ব্যবহার করছে বলেও আঙুল তোলে বিরোধীরা। তখনই এ সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণে আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর বিমল জালানের নেতৃত্বে গঠিত হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। তাদের সুপারিশ মাফিক ২০১৯-এ ইকনমিক ক্যাপিটাল ফ্রেমওয়ার্ক বিধি আনে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কমিটি সুপারিশে বলেছিল, দেশের সুরক্ষার স্বার্থে এই উদ্বৃত্ত তহবিল ৬.৫০-৫.৫০ শতাংশ হওয়া উচিত। কেন্দ্রকে টাকা দেওয়া হচ্ছে এটি মেনেই, দাবি আরবিআইয়ের।