—ফাইল চিত্র।
ডিভিডেন্ড বণ্টন কর কমানোর বা তুলে দেওয়ার দাবি অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছিল কর্পোরেট সংস্থাগুলি। তাদের দাবি মেনে অবশেষে সেই কর ব্যবস্থায় ইতি টেনেছে মোদী সরকার। কিন্তু সেই করের বোঝা আদতে চেপেছে যাদের হাতে সংস্থার লভ্যাংশ যাচ্ছে, সেই শেয়ারহোল্ডারদের কাঁধে। ফলে নতুন আয়করের কাঠামোর মতো, এই ব্যবস্থা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারের লগ্নিকারীদের মধ্যে।
সংশয় কাটাতে রবিবার গোটা প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকার। বোঝাতে চেষ্টা করেছে, পুরোনো ব্যবস্থায় পরোক্ষ ভাবে হলেও লগ্নিকারীদেরই বোঝা বইতে হচ্ছিল। বাজেট প্রস্তাব কার্যকর হলে তাঁদের অনেক কম হারে কর গুনতে হবে। ছোট সাধারণ লগ্নিকারীদের হয়তো করই দিতে হবে না। সে ক্ষেত্রে এখনও যাঁরা শেয়ার বাজারের বাইরে রয়েছেন তাঁদের একাংশও সেখানে লগ্নি করতে আগ্রহী হতে পারেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, ‘কম কর নাকি বেশি করের’ এই ধন্দে আদতে কর ফাঁকি বাড়বে না তো? প্রবণতা তৈরি হবে না তো ডিভিডেন্ড থেকে আয়ের অঙ্ক লুকিয়ে রাখার? বিশেষ করে বড় লগ্নিকারীদের মধ্যে?
এ দিন কেন্দ্র জানিয়েছে, চালু পদ্ধতিতে ১৫% হারে ডিভিডেন্ড বণ্টন কর গুনতে হয় সংস্থাগুলিকে। সারচার্জ ও সেস বসার পরে তা আদতে ২০.৫৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। আবার ডিভিডেন্ড থেকে লগ্নিকারীর আয় বছরে ১০ লক্ষ টাকার বেশি হলে তার উপরে গুনতে হয় ১০% হারে কর। ঋণপত্র ভিত্তিক ফান্ডের ক্ষেত্রে ওই অঙ্ক আরও বেশি। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব কার্যকর হলে করের পদ্ধতি এত জটিল থাকবে না। ডিভিডেন্ড থেকে আয়কে বছরের আয়ের মধ্যে ধরে আয়করের হিসেব কষতে হবে। এমনকি, যাঁদের বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকার নীচে তাঁদের করই গুনতে হবে না। ফলে শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে লগ্নির ব্যাপারে আগ্রহ বাড়বে তাঁদের মধ্যে। তা ছাড়া ছোট-বড় সমস্ত সংস্থার উপরে একই হারে কর ধার্য হওয়াও ঠিক নয়। নতুন নিয়মে এই ‘বৈষম্য’ দূর হবে। কেন্দ্রে যুক্তি, অধিকাংশ দেশে ডিভিডেন্ডের উপরে কর সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে গুনতে হয় না। দিতে হয় লগ্নিকারীদের।
যদিও অনেকের বক্তব্য, শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীদের অধিকাংশই বড় আয়ের। এখনও আয়করের আওতায় আসেননি, এমন অংশের লগ্নির পরিমাণ আর কত? অতএব ওই অংশের উপরে করের চাপ আরও বাড়লে আদতে কর ফাঁকির প্রবণতাই বাড়তে পারে। বা কমতে পারে শেয়ার বাজারে লগ্নির প্রতি আগ্রহ।