কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু উন্নয়ন প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলি অসম্মত হতে পারে না। শনিবার কলকাতায় দাঁড়িয়ে এই যুক্তি দেখিয়েই উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সকলকে একমত হওয়ার আর্জি জানালেন কেন্দ্রীয় ইস্পাত ও তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উন্নয়নের স্বার্থে সকলের সঙ্গে কথা বলতে তৈরি।
এই মুহূর্তে মোদী সরকারের সিএএ, এনআরসি নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশ। তারই মধ্যে বণিকসভা সিআইআই এবং ভারত চেম্বারের দু’টি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধান। দু’টি সভাতেই দেশের ১১৫টি জেলার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের বিশেষ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে জানান, এর মধ্যে ৫৮টিই পূর্বাঞ্চলে পড়ছে। তার পরেই মন্ত্রীর বার্তা, সিএএ, এনআরসি নিয়ে কোনও রাজ্যের আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু সেখানকার মানুষকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, কাজের সুযোগের মতো পরিষেবা দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তারা অসম্মত হতে পারে না। ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়ের দুই অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীও রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে মিলে কাজ করার কথা জানিয়েছেন বলেও দাবি তাঁর।
এ দিন কলকাতায় পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সিআইআইয়ের অনুষ্ঠানের পরে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দরের ১৫০ বছর পূর্তি ঐতিহাসিক ঘটনা। তা পালন করতেই প্রধানমন্ত্রীর এই সফর। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, উন্নয়ন নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলতে তৈরি তিনি। রাজনীতি দলের বিষয়। কিন্তু দেশের সার্বিক উন্নয়নের যে দায়িত্ব তাঁর কাঁধে, তা-ই পালন করছেন তিনি।’’ সিআইআইয়ের সভায়
উপস্থিত রাজ্যের শিল্পসচিব বন্দনা যাদবও অবশ্য বলেছেন, উন্নয়নের বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ নেই।
বণিকসভাটির মঞ্চ থেকেই এ দিন পূর্বাঞ্চলে সার্বিক ইস্পাত শিল্পের ‘ক্লাস্টার’ (শিল্পগুচ্ছ) গড়ার নতুন প্রকল্প ‘পূর্বোদয়’ সূচনা করেন প্রধান। যেখানে পুরনো প্রকল্পের পাশাপাশি লগ্নি হবে নতুনগুলিতেও। সেগুলিকে ঘিরে গড়ে উঠবে ইস্পাতের অনুসারী শিল্প। এ জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ার কাজে সহায়তা দেবে কেন্দ্র। এই প্রকল্পে বিনিয়োগের সম্ভাব্য অঙ্ক ৭০০০ কোটি ডলার।