তেলের চড়া দামের যুক্তি এখন ঝড়ও

তেলমন্ত্রীর দাবি, ঘূর্ণিঝড় হার্ভির ফলে আমেরিকার টেক্সাসে তেল শোধনাগার বন্ধ। উৎপাদন ১৩% ধাক্কা খেয়েছে। তাই বিশ্ব বাজারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ১৮% থেকে ২০% বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

ধর্মেন্দ্র প্রধান

রোজ একটু একটু করে বাড়তে-বাড়তে পেট্রোল-ডিজেলের দাম এখন মাত্রাছাড়া। তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে বুঝতে পেরে বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির প্রধান ও মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আর বৈঠকের পরে তেলের দাম বাড়ার জন্য দায়ী করলেন আমেরিকায় আছড়ে পড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়কে! একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, এখনই রোজ তেলের দাম ঘোষণার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রশ্ন নেই।

Advertisement

তেলমন্ত্রীর দাবি, ঘূর্ণিঝড় হার্ভির ফলে আমেরিকার টেক্সাসে তেল শোধনাগার বন্ধ। উৎপাদন ১৩% ধাক্কা খেয়েছে। তাই বিশ্ব বাজারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ১৮% থেকে ২০% বেড়েছে। যুক্তি হিসেবে ঝড়ের কথা বলতে গিয়ে হালে হওয়া ইরমার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন তিনি। তবে তাঁর আশ্বাস, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম আবার কমতে শুরু করেছে। তাই এ দেশেও তেলের দাম আগামী দিনে কমবে।

বুধবারই কলকাতায় পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৭৩.১২ টাকা। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পেট্রোলের দাম এতখানি বাড়েনি। কিন্তু তেলমন্ত্রীর পাল্টা যুক্তি, ইউপিএ-জমানায় ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে পেট্রোলের দাম দিল্লিতে ৭৬ টাকা ছুঁয়েছিল। মোদী জমানায় এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির প্রশ্ন, মনমোহন জমানায় পেট্রোল যখন ৭০ ছাড়িয়েছিল, তখন অশোধিত তেল ছিল আকাশছোঁয়া। এখন পরিস্থিতি তা নয়। তা হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম এত চড়া হওয়ার কারণ কী?

Advertisement

আরও পড়ুন: বৈধতার পরীক্ষায় উতরে যাবে আধার, আশা অর্থমন্ত্রীর

তেলমন্ত্রীর যুক্তি, শুধু অশোধিত তেল নয়। বিশ্ব বাজারে পেট্রোল-ডিজেলের দামের ভিত্তিতেও এ দেশের তাদের দাম ঠিক হয়। তা ছাড়া, অশোধিত তেলের দরও গত সপ্তাহে ব্যারেল প্রতি ৩.৫০ ডলার বেড়েছে।

তিওয়ারির মতে, এখন অশোধিত তেলের দাম অনুযায়ী পেট্রোলের দর হওয়া উচিত লিটারে ৩৭.১৩ টাকা, ডিজেলের ২৮.৮৫ টাকা। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘২০০৮ সালে জ্বালানির দাম বাড়ার সময়ে বিজেপি তৎকালীন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে। তা হলে এখন? অশোধিত তেলের দাম কমা সত্ত্বেও কেন্দ্র মানুষকে সুরাহা দিচ্ছে না। উল্টে উৎপাদন শুল্ক বাড়াচ্ছে।’’

তেলে উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েই গত অর্থবর্ষে ২.৪২ লক্ষ কোটি টাকা কোষাগারে তুলেছেন অরুণ জেটলি। প্রধানের যুক্তি, জাতীয় সড়ক, সড়ক উন্নয়ন, রেল আধুনিকীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যে অর্থ চাই। উৎপাদন শুল্ক কমালে সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অবশ্য অর্থ মন্ত্রকই নেবে বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement