—প্রতীকী চিত্র।
ঝড়ের বেগে দৌড়চ্ছে শেয়ার বাজার!
৩০ জুন ৬৩ হাজারের ঘর থেকে ৬৪ হাজারে পা রেখেছিল সেনসেক্স। তার পরে মাত্র ১০টি কাজের দিন পার করে ১৪ জুলাই সেটি ঢুকে পড়ল ৬৬ হাজারে (৬৬,০৬১)। অর্থাৎ, ২০০০ পয়েন্ট উঠতে মাত্র দু’সপ্তাহ সময় নিল সূচকটি। নজির গড়েছে নিফ্টিও। শুক্রবার তা ১৯,৫৬৪ পয়েন্টে থিতু হয়, যা সূচকটির নতুন রেকর্ড। শুক্রবার বাজারের উত্থানে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি জুগিয়েছে অনেক দিন ঝিমিয়ে থাকা তথ্যপ্রযুক্তির শেয়ারগুলি। এই ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল-জুন) ফলাফল প্রকাশ করেছে টিসিএস, এইচসিএল এবং উইপ্রো। সে দিন এই তিন সংস্থার শেয়ার দরের উত্থান হয় যথাক্রমে ৫.১৩%, ৩.৮০% এবং ২.৬৯%। মোটা সওদা করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। ওই দিন তাদের নিট লগ্নি ছিল ২৬৩৬ কোটি টাকা। জুনে আমেরিকার খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৩ শতাংশে নামার খবরও শক্তি জোগায় বাজারকে। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, আগামী সপ্তাহে ফেডারাল রিজ়ার্ভ সম্ভবত চড়া হারে সুদ বাড়াবে না।
যাঁরা বাজারে যান তাঁরা আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন যে, জুনে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা তুলবে। আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে বুধবার সরকারি পরিসংখ্যানে জানায়, গত মাসে খুচরো বাজারে ওই হার বেড়ে হয়েছে ৪.৮১%। উত্তর ও পশ্চিম ভারতে অতিবৃষ্টি এবং পূর্ব ও দক্ষিণে বৃষ্টির ঘাটতির ফলে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা। ফলে কৃষি খাদ্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর ফলে জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে। ফলে সুদ কমার আলোচনা আপাতত বন্ধ। উদ্বেগের খবর আরও আছে। জুনে রফতানি ২২% কমে হয়েছে ৩২৯৭ কোটি ডলার। তিন বছরে সর্বনিম্ন। এই পরিস্থিতিতেও সূচক কিন্তু উঠেই চলেছে। যা অবাক করার মতো!
বাজারের জন্য অবশ্য ভাল খবরও আছে। মে মাসে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার বেড়ে হয়েছে ৫.২%। এপ্রিলে যা ৪.৫% ছিল। প্রথম ত্রৈমাসিকে দেশের বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএসের নিট মুনাফা ১৬.৮% বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে ১১,০৭৪ কোটি টাকায়। ৭% বেড়ে এইচসিএল টেকনোলজিসের পুঞ্জীভূত মুনাফা ছুঁয়েছে ৩৫৩৪ কোটি। উইপ্রোর মুনাফা ১২% বেড়ে হয়েছে ২৮৭০ কোটি টাকা। এই সপ্তাহেও বেশ কিছু সংস্থার ফল প্রকাশ হবে।
সূচক তেজি থাকায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে নতুন ইসুর (আইপিও) বাজার। কলকাতার সেনকো গোল্ডের আইপিওতে আবেদন জমা পড়েছিল প্রয়োজনের তুলনায় ৭৭.২৫ গুণ। ফলে নথিভুক্তির দিনই দর প্রায় ২৮% ওঠে। ৩১৭ টাকায় ইসু করা শেয়ারটির দাম ওঠে ৪০৫ টাকায়। গত সপ্তাহে শেষ হওয়া উৎকর্ষ স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের আইপিওতে আবেদন জমা পড়েছে প্রয়োজনের তুলনায় ১০১ গুণ।
ব্যক্তিগত আয়করদাতাদের ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমার শেষ দিন ৩১ জুলাই। অর্থাৎ, হাতে আর মাত্র দু’সপ্তাহ। রিটার্ন ফর্ম ভরতে গিয়ে কেউ কেউ সমস্যায় পড়ছেন। অভিযোগ, আয়কর দফতরের সাইটে দেওয়া ২৬এএস, এআইএস এবং টিআইএস ফর্মে কেটে নেওয়া কর এবং বিভিন্ন আয় সংক্রান্ত যে তথ্য দেখানো হচ্ছে, তার দু’একটি বাস্তবের সঙ্গে মিলছে না। এই সব ক্ষেত্রে আয়কর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ টিডিএস এবং সুদ, ইত্যাদি সংক্রান্ত আয়ের শংসাপত্র সংগ্রহ করুন ব্যাঙ্ক এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে। তার ভিত্তিতে রিটার্ন ফর্ম ভর্তি করুন। আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য দেখানো হলে প্রাপ্ত শংসাপত্র আয়কর পোর্টালে আপলোড করে ভুল সংশোধন করতে অনুরোধ জানান।
(মতামত ব্যক্তিগত)