প্রতীকী ছবি।
জিনিসের চড়া দামে যখন নাভিশ্বাস উঠছে, তখন আচমকা সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বয়স্ক নাগরিক-সহ সমাজের কিছু মানুষ বহু দিন পরে সামান্য হলেও হাঁফ ছেড়েছিলেন। হা-পিত্যেশ করে বসেছিলেন কবে ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে জমা টাকা একটু বেশি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে, সেই আশায়। সপ্তাহের শুরুতে স্টেট ব্যাঙ্ক সেই পথে হাঁটল বটে। কিন্তু সাধারণ রোজগেরে, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও প্রবীণ মানুষদের হতাশা ছাড়া কিছুই জুটল না। কারণ, তা বাড়ানো হল ২ কোটি টাকা বা তার বেশি অঙ্কের আমানতে। বৃদ্ধি ৪০-৯০ বেসিস পয়েন্ট। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, সংসার চালাতে গিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে যাঁরা প্রতিদিন নিষ্পেষিত হন, তাঁদের কত জনের ব্যাঙ্কে ২ কোটি টাকা থাকে? বিশেষত এঁদের মধ্যে যাঁরা পুরোপুরি সুদ নির্ভর।
দৈনন্দিন জীবনযাপনের খরচ যতই বাড়ুক, আমানতে সুদ না বাড়লে সুদ নির্ভর মানুষদের আয় বাড়ে না। মূল্যবৃদ্ধির (খুচরো বাজারে প্রায় ৭%) জেরে তাঁদের প্রকৃত আয় ইতিমধ্যেই নেমেছে শূন্যের নীচে। ফলে ওই সব জায়গা থেকে হাতে কিছুই আসছে না। সুদ বৃদ্ধির ক্ষীণ সম্ভাবনাও তাঁদের পক্ষে তাই বিরাট স্বস্তির। কিন্তু তাতে লাভ হল কোথায়, আক্ষেপ অনেকের।
এমনিতে গত ফেব্রুয়ারিতে স্টেট ব্যাঙ্ক ২ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতে সুদ বাড়িয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে হারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) বাড়ানোয় এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক-সহ অনেকেই ফের ঋণে সুদ বাড়াতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার ১০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে ব্যাঙ্ক অব বরোদাও। তবে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমাতেও সুদ বাড়ার কথা। ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি দেবব্রত সরকারের দাবি, শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোয় ছোট শিল্প-সহ বিভিন্ন ঋণে দ্রুত সুদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু জমায় দেরি হল এবং সাধারণ মানুষ সেই সুবিধা পেলেন না। যদিও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেনের আশা, কম জমাতেও সুদ বাড়াবে সকলে। কারণ আরবিআইয়ের কিছু পদক্ষেপে ব্যাঙ্কিং শিল্পকে নগদের জোগান বাড়ানোয় জোর দিতে হবে। ফলে খুচরো আমানতকারীদের টানতে সুদ বৃদ্ধি ছাড়া পথ নেই।