ফাইল ছবি
দেশের বাজারে কিছু গাড়ির বিক্রি গত মাসে বাড়ল বটে, কিন্তু সব ক্ষত যে সারেনি ফের তা স্পষ্ট হল। সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে ডিলারদের সংগঠন ফাডা জানাল, গত মাসে এবং এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে প্রাক-করোনা পর্বের তুলনায় এখনও পিছিয়ে শোরুম থেকে বেশ কিছু ধরনের গাড়ি বিক্রি।
চাহিদা ও যন্ত্রাংশের জোগানের সঙ্কটে করোনাকালে বারবার বেহাল হয়েছে গাড়ি শিল্প। অতিমারির একটি করে ঢেউ কাটিয়ে যখনই তারা ছন্দে ফেরার চেষ্টা করেছে, নতুন ঢেউ তাতে বাদ সেধেছে। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, ভারত-সহ বিশ্ব জুড়ে মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সেই সঙ্কটেই যেন আরও বেশি করে ঘি ঢেলেছে।
ফাডা জানিয়েছে, যাত্রী গাড়ি ও ট্র্যাক্টরের বিক্রি বৃদ্ধি বজায় থাকার পাশাপাশি গত মাসে মাথা তুলেছে বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রিও। তবে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ভিঙ্কেশ গুলাটি মনে করিয়েছেন, গত বছরের জুনে অতিমারির ধাক্কায় বিক্রির নিচু ভিতের বিষয়টি। এখনও যে বিক্রি সেই অর্থে ছন্দে ফেরেনি, তা বলছে ২০১৯ সালের জুনের চেয়ে সার্বিক বিক্রি গত মাসে প্রায় ৯% কম থাকা। এপ্রিল-জুনের হিসাবেও তা ৮.১৩% কম।
ফাডার বক্তব্য, সব অত্যাবশ্যক পণ্যের চড়া দামে চাপ বাড়ছে মানুষের উপরে। বাড়তি খরচের সুযোগ কমছে। সঙ্কট আরও বাড়িয়েছে জ্বালানির চড়া দাম। সব মিলিয়ে কম দামি যাত্রিবাহী ও দু’চাকার গাড়ির বাজার ক্ষতিগ্রস্ত। প্রথম গাড়ি কেনার মধ্যে বেশিরভাগ ক্রেতাই এই দুই ধরনের গাড়িকে পছন্দ করেন। তার উপরে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর থেকে সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। ভিঙ্কেশ জানান, গাড়ি কেনা ও ব্যবহারের খরচ বৃদ্ধি, চড়া মূল্যবৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন কারণে গ্রামে দুই ও তিন চাকার ব্যবসার গতি এখনও ঢিমে। গ্রামের বাজার স্থিতিশীল হলে উৎসবের মরসুম তুলনায় ভাল হবে বলে ফাডার আশা।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রোজগারে ধাক্কা, তেলের চড়া দর তো রয়েইছে। তার উপরে সংস্থাগুলি গত কয়েক মাসে যে দাম বাড়িয়েছে, তা-ও বিক্রির সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে। চলতি অর্থবর্ষে বেড়েছে গাড়ি বিমার খরচও। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও বেশি টাকা বেরোবে পকেট থেকে। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক মাস শিল্পের কাছে চ্যালেঞ্জের। ফাডা-র সমীক্ষাও বলছে, বেশিরভাগ ডিলারেরই ধারণা স্বল্প মেয়াদে বাজার অস্থির থাকবে। ৪১.৮% মনে করছেন তা ভাল হবে। জুলাইয়ে ভাল বিক্রির আশা করছেন ৫০% ডিলার। বাকিরা বলছেন, তা একই রকম বা খারাপ হতে পারে।