ছবি: পিটিআই।
ছ’মাস ধরে নাগাড়ে খারাপ খবরের পরে একটি-দু’টি আশার আভাস। তাতেই শক্তি ধরে রেখেছিল শেয়ার বাজার। তবে অর্থনীতির সঙ্কট যে আশঙ্কাকেও ছাপিয়েছে এবং কাটতে বহু দেরি, ফের সেটা বুঝে গত বৃহস্পতিবার ১০৬৬ পয়েন্ট হারায় সেনসেক্স। বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে কাঁপুনিও এর জন্য দায়ী।
জিএসটি আদায় বা গাড়ির বিক্রি বাড়ার মতো কিছু স্বস্তির খবর আসছে ঠিকই। কিন্তু তাতে দিগন্ত বিস্তৃত কালো মেঘ এখনই কাটার নয়। অর্থনীতির ছন্দে ফিরতে সময় লাগবে। ততদিন এমন ওঠাপড়া চলবে বাজারে। গোটা বিশ্বে বাজারের মেজাজ এক ঝটকায় সদর্থক করতে পারে শুধু সফল টিকার আত্মপ্রকাশ ও বহু সংখ্যায় দ্রুত বণ্টন।
বৃহস্পতিবার সেনসেক্সে ধসের অন্যতম কারণ ছিল, শেয়ার বেচে লাভ তোলার হিড়িক। তার উপরে লগ্নিকারীরা বুঝেছেন, পণ্যের চাহিদা বাড়াতে কেন্দ্র ঘোষিত ৭৩ হাজার কোটি টাকার নতুন প্যাকেজ দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে পারবে না। অথচ অগস্টেও কারখানায় উৎপাদন বিপর্যস্ত।
মন্দ খবর
• সেপ্টেম্বরে খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা তুলে ৭.৩৪% ও ১.৩%।
• অগস্টেও কারখানার উৎপাদন বেহাল, কমেছে ৮.৬%।
• প্রয়োজন ও আশার তুলনায় পুজোর মুখে অতি সামান্য আর্থিক দাওয়াই কেন্দ্রের।
• ইউরোপে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। ফের অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়ে লকডাউন, কড়াকড়ি।
• করোনার টিকা পাওয়া ঘিরে ধোঁয়াশা।
রুপোলি রেখা
• সেপ্টেম্বরে দেশে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ২৬.৪৫%।
• গত মাসে জিএসটি আদায়ও ছুঁয়েছে ৯৫,৪৮০ কোটি টাকা।
• রফতানিও বেড়েছে ৬%। আমদানি কমেছে ১৯.৬%।
• এখনও পর্যন্ত এই অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত সংস্থার আর্থিক ফলে অবস্থা ভাল হওয়ার ইঙ্গিত।
• অক্টোবরে ভারতের বাজারে টাকা ঢালছে বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।
• জুলাই-সেপ্টেম্বরে দুই অগ্রণী ইস্পাত প্রস্তুতকারকের ২২.৫% ও ৩১.৩% বিক্রি বৃদ্ধি।
আশাবাদীরা অবশ্য দমেননি। শুক্রবারই তাঁরা শেয়ার কিনতে নামায় সেনসেক্স ২৫৫ পয়েন্ট উঠে ফের ৪০ হাজারের দোরগোড়ায় (৩৯,৯৮৩)। ভাল খবর, জুলাই-সেপ্টেম্বরে টাটা স্টিল ও স্টিল অথরিটির ইস্পাত বিক্রি অনেকটা বেড়েছে। এটা অন্য কিছু শিল্পে প্রাণ ফেরার লক্ষণ হতে পারে। অক্টোবরের প্রথম ১০ দিনে ভারতে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির ১০৮৬ কোটি টাকা নিট লগ্নিও স্বস্তির। জুলাই-সেপ্টেম্বরে উন্নত আর্থিক ফল করেছে ইনফোসিস। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মুনাফা ১৮.৪% বেড়ে ৭৫১৩ কোটি।
(মতামত ব্যক্তিগত)