প্রতীকী ছবি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের পদক্ষেপে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প যে ধাক্কা খেয়েছে, তা এ বার কার্যত স্বীকার করে নিল মোদী সরকার। সেটা-ও একেবারে সংসদে।
ছোট-মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের কাছে কেরলের কংগ্রেস সাংসদ টি এন প্রতাপন প্রশ্ন করেছিলেন, নোটবন্দির ফলে যে এমন বহু সংস্থা ভেঙে পড়েছে, সে সম্পর্কে কি সরকার অবহিত? লিখিত উত্তরে এই শিল্পের নতুন মন্ত্রী নারায়ণ রাণে জানান, ‘‘হ্যাঁ, শিল্প এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে যে প্রতিক্রিয়া মিলেছে, তা থেকে ছোট-মাঝারি শিল্পকে যে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে সে সম্পর্কে সরকার অবহিত।’’ মোদী সরকারের এই ‘স্বীকারোক্তি’-র পরে প্রশ্ন উঠেছে, ছোট-মাঝারি শিল্প মন্ত্রক কি ভুল করে এ কথা স্বীকার করে নিল?
নোট বাতিলের ধাক্কায় কত ছোট-মাঝারি শিল্প বন্ধ হয়েছে, কংগ্রেস সাংসদ কেন্দ্রের কাছে তা-ও জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেই পরিসংখ্যান দেয়নি। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, সরকারি ভাবে কখনও স্বীকার করা না-হলেও, নোটবন্দিতে যে এই শিল্প মার খেয়েছে তা ২০১৮ সালে প্রকাশিত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও বলা হয়েছিল। রিপোর্টে উল্লেখ, প্রথমে নোট বাতিল, তার পরে জিএসটি ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলিকে জোর ধাক্কা দেয়। নোটবন্দির পরে তাদের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমে। এই শিল্প মূলত অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করে। সেখানে বহু ক্ষুদ্র সংস্থা, দিনমজুর যুক্ত। তাই নগদের লেনদেন বেশি। ফলে ধাক্কা সেখানে বেশি লেগেছিল। অথচ জিডিপি-তে ছোট-মাঝারি শিল্পের অংশ প্রায় ৩০%। কারখানার উৎপাদনের ৪৫% এই শিল্প থেকে আসে। রফতানির ৪০ শতাংশও তাদের অবদান।
কালো টাকা, জাল নোট, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নোট বাতিল করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, এর কোনওটাতেই ইতি পড়েনি। উল্টে নোট বাতিলের ধাক্কায় নগদ লেনদেন বন্ধ হওয়ায় বহু ছোট-মাঝারি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হয়। ফলে নোটবন্দির কার্যকারিতা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সরকার দাবি করে গিয়েছে, এর লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, সরকার এ বার নোট বাতিলের খারাপ দিকটাও স্বীকার করল।