বাসে, অটোয় কিংবা ছোট-খাটো কেনাকাটায় কয়েনের আকাল যে গত কয়েক মাসে প্রায় ভোজবাজির মতো উবে গিয়েছে, সে কথা নতুন নয়। এখন বরং কিছু ক্ষেত্রে ছোট ব্যবসায়ীরা উল্টে সমস্যায় পড়ছেন ব্যাঙ্কে এক সঙ্গে বেশি করে তা জমা করতে গিয়ে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি এ নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে না-চাইলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, কয়েন নিয়ে এই উলট পুরাণের মূল কারণ দু’টি। এক, নোট সঙ্কটের সময় থেকে এখনও পর্যন্ত বাজারে কয়েনের জোগান ক্রমাগত বাড়তে থাকা। আর দুই, একসঙ্গে বেশি কয়েন জমা নেওয়ায় ব্যাঙ্কের অনীহা।
ইউকো ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের নেতা এবং পরিচালন পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য পার্থ চন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যা খবর, নোট বাতিলের পরে তার ঘাটতির খানিকটা কয়েন দিয়ে মিটিয়েছে এবং এখনও মেটাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বাজারে কয়েন সরবরাহ বেড়েছে।’’
ব্যাঙ্কের বিভিন্ন সূত্র থেকেও জানা যাচ্ছে যে, এই উপচে পড়া কয়েন জোগানের শুরু নোট নাকচের সময় থেকেই। নোট বাতিলের ঘোষণার পরে অনেক সময়ে দেখা গিয়েছিল, গাড়িতে করে জায়গায়-জায়গায় নগদ জোগাচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। তখন সেখান থেকে কয়েনে দু’হাজার টাকা পর্যন্তও পেয়েছেন অনেকে। চটজলদি নগদের জোগান বাড়াতে তখন থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে কয়েন পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছিল শীর্ষ ব্যাঙ্কও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সেই ধারা এখনও অব্যাহত।
এর ফলে অটো-বাসে ভাড়া মেটাতে হয়রানি কমেছে ঠিকই। কিন্তু বিপুল পরিমাণ খুচরো পেয়ে সমস্যায় ছোট ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, অত কয়েন জমা নিতে চায় না ব্যাঙ্ক। ফলে আতান্তরে পড়তে হয়।
ব্যাঙ্কগুলির দাবি, গ্রাহকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি কয়েন এক লপ্তে নেওয়া তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। ইউকো-র জেনারেল ম্যানেজার রনি গুপ্ত বলেন, ‘‘বস্তা ভর্তি কয়েন জমা নেওয়া সম্ভব নয়। তা গুনবে কে? রাখা হবে কোথায়?’’ তা ছাড়া, এ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট নিয়মও রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইস্যু বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার জে পি বিশ্বাস বলেন, তাঁদের কাছে নোট দিয়ে কেউ সমমূল্যের কয়েন নিতে পারেন। কিন্তু উল্টোটা করার ব্যবস্থা নেই।