ধর্মতলায় না-হোক, কর্মখালি আছে চটকলে। বঙ্গে বেকারের সংখ্যা যে হঠাৎ কমে গিয়েছে, তা-ও নয়। কিন্তু কাজ বিচারের মানসিকতা অগ্রাধিকার পাওয়ায় পর্যাপ্ত কর্মী পাচ্ছে না চটকল!
চটকলে কাজ তৈরির লক্ষ্যে হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার কিছু জুটমিলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য। প্রশিক্ষণ চলাকালীন দেওয়া হচ্ছে বৃত্তি। রয়েছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। প্রশিক্ষণ শেষে সফলদের কাজের নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়েছে। তবু পর্যাপ্ত সাড়া মিলছে না! শ্রম দফতরের বক্তব্য, বিভিন্ন জেলার কর্মসংস্থান কেন্দ্র থেকে যে-সব কর্মপ্রার্থীকে চটকলে পাঠানো হচ্ছে, তাঁদের অধিকাংশই প্রশিক্ষণে যোগ দিচ্ছেন না (সারণিতে)।
শ্রম দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, প্রশিক্ষণ চলাকালীন বৃত্তির অঙ্ক (প্রথম ৪৫ দিন ২০০ টাকা ও পরের ৪৫ দিন ২৫০ টাকা), কাজের সময়, থাকার পরিবেশ এবং প্রশিক্ষণ শেষে মূল বেতন (দিনে ৩৭০ টাকা ও অন্য সুবিধা) পছন্দ না-হওয়ায় অনেকে চটকলে কাজে আগ্রহী হচ্ছেন না।
বিভিন্ন চটকলের কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই যুক্তি মানতে রাজি নন। যে-সব চটকলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে, তার একটির এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বৃত্তির অঙ্ক, কাজের সময়-সহ সব কিছুই ঠিক হয়েছিল সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। থাকা-থাওয়ার ব্যবস্থাও করেছি। তাই এ-সব কথা অর্থহীন।’’ তাঁর মতে, কর্মসংস্থান কেন্দ্র থেকে নাম পাঠানোয় অনেকে হয়তো ভাবছেন, তাঁদের সরকারি চাকরিতে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু চটকলে এসে শ্রমিকের কাজের কথা জেনে আগ্রহ হারিয়ে চলে যাচ্ছেন অনেকে।
ওই আধিকারিকের আরও সংযোজন, মূলত স্কুলছুট, শিক্ষিত, কর্মসংস্থান কেন্দ্রে নথিভুক্ত কর্মঠ বেকারদের চটকলে শ্রমিকের কাজের সুযোগ দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। এমন অনেককে পাঠানো হচ্ছে, যাঁরা কর্মসংস্থান কেন্দ্রের নথিতে মাধ্যমিক পাশ বা মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ। তাঁদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষা শেষ করে অন্য চাকরি খুঁজছেন। শ্রমিকের কাজ করতে রাজি নন। তবে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার মতো যে-সব জেলায় কাজের সুযোগ তেমন বাড়েনি, সেখানকার অনেক প্রার্থী চটকলের কাজে টিকে যাচ্ছেন। শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানান, চটকলের মজুরি সংক্রান্ত বর্তমান চুক্তির মেয়াদ মার্চে শেষ হবে। নতুন চুক্তিতে মজুরি বাড়লে যুবকদের আগ্রহও বাড়তে পারে।