প্রতীকী ছবি।
গত বছর অতিমারির হানার আগে থেকেই অর্থনীতির গতি কমতে শুরু করেছিল। মাথা নামিয়েছিল গৃহস্থের সঞ্চয়। এর পরে করোনার প্রথম ঢেউ সামাল দিতে লকডাউনের পথে হাঁটে কেন্দ্র। ফলে বাজারহাট বন্ধ থাকায় মানুষ কেনাকাটাই করতে পারেননি। তা সত্ত্বেও দেখা গেল, লকডাউন ওঠার পরে গৃহস্থের সঞ্চয় কমেছে। বেড়েছে দেনার মাত্রা। অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, এর থেকেই স্পষ্ট, গত বছর অতিমারি রুটিরুজিতে ধাক্কা দেওয়ায় আমজনতাকে সঞ্চয়ের ভাঁড়ারে হাত দিতে হয়েছে। খরচ চালাতে করতে হয়েছে দেনাও।
বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল-জুনে গৃহস্থের সঞ্চয়ের হার ছিল জিডিপি-র ২১%। জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা কমে ১০.২% হয়। আর অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা ৮.২ শতাংশে নেমে আসে। ব্যাঙ্কে জমার হার ৭.৭% থেকে নেমেছে ৩ শতাংশে। অর্থ মন্ত্রকের উদ্বেগ, সঞ্চয়ের হার এই ভাবে কমতে থাকলে শিল্পে লগ্নির জন্য ঋণ জোগানো যাবে কোথা থেকে? মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে গৃহস্থের সঞ্চয়ের হার ২৩% ছিল। এখন তা ৮ শতাংশের ঘরে। অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, আয় বৃদ্ধির হার কমে যাওয়াতেই সঞ্চয়, কেনাকাটা কমছে। বাড়ছে দেনা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, করোনার পরে গৃহস্থের ব্যাঙ্ক থেকে ধার করার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের (যেখান থেকে ঋণ নিয়ে মানুষ মূলত দামি জিনিসপত্র কেনেন) পরিমাণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দামি পণ্য কেনার সময়ে ক্রেতারা সাধারণত সঞ্চয়ের টাকা থেকে কিছুটা দাম মেটান। বাকিটা মেটান ঋণ নিয়ে। কিন্তু করোনায় সঞ্চয়ের পরিমাণই কমেছে। ফলে কমেছে দামি পণ্যের বিক্রিবাটা।
অন্য দিকে, গৃহস্থের দেনার হার গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৩৭.১% থেকে অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৩৭.৯ শতাংশে পৌঁছেছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এর আগে দাবি করেছিল, লকডাউন ওঠার পরে সবাই ঋণ নিতে শুরু করেছেন বলে দেনার পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কেরই পরিসংখ্যানেই উঠে এসেছে, করোনার আগে থেকেই জিডিপি-র তুলনায় গৃহস্থের মোট দেনার পরিমাণ নিয়মিত ভাবে বাড়ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের গোড়ায় তা ৩১.৪% ছিল। যা এখন ৩৮% ছুঁইছুঁই।