প্রতীকী ছবি
প্রথমে নোটবন্দি, তড়িঘড়ি জিএসটি চালু। তার পরে অর্থনীতির ঝিমুনিতে চাহিদায় ধাক্কা, চড়া দাম (সোমবার ১০ গ্রাম ২২ ক্যারাট গয়না সোনা ছিল জিএসটি-সহ ৪৬,২০০ টাকা)। এখন লকডাউন। কয়েক বছর ধরে দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না গয়না শিল্পের। ফলে বিক্রেতাদের সঙ্গে আতান্তরে গয়নার কারিগরেরাও। রাজ্যে কাজ প্রায় বন্ধ। অনেকে ভিন্ রাজ্যে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন। কারিগরদের একাংশের অভিযোগ, এর উপরে খাঁড়ার ঘা দিচ্ছে ব্যাঙ্ক। যে প্রকল্পে সহজে ঋণের সুবিধা পাওয়ার কথা, তা দিতেই টালবাহানা করছে। ফলে অনেক গয়না শিল্পী নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েও পুঁজির অভাবে পারছেন না।
গয়না শিল্পীদের কারও অভিযোগ, অতি ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য মুদ্রা যোজনার মতো প্রকল্প থাকলেও, তার সুবিধা মিলছে না। কারও আক্ষেপ, কেন্দ্রের ২০ লক্ষ কোটির ত্রাণ প্রকল্পে ছোট শিল্প, হকারদের ঋণের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের জন্য কিছুই নেই।
গয়নার কারিগরদের সংগঠন অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দারের দাবি, “মুদ্রা ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা থাকলেও মিলছে না। ২০১৫ সালে গয়না কারিগরকে কুটির শিল্পের কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনায় প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকে দক্ষ কর্মীর সার্টিফিকেটও পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও যখন গয়নার ক্ষুদ্র কারখানা গড়তে ঋণ চাইছেন, খালি হাতে ফেরানো হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ব্যবসার ফাঁড়া কাটবে কবে, প্রশ্ন পর্যটন শিল্পের
ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্পকে সহজে ঋণ দিতে মুদ্রা যোজনা চালু করেছিল কেন্দ্র। ব্যবসা শুরু করতে চাইলেও বিনা বন্ধকে এই ঋণ পাওয়ার কথা। যোগ্যদের অন্যতম কারিগর। ‘শিশু’ প্রকল্পে তাঁদের ব্যবসা শুরুর জন্য ৫০,০০০ টাকা ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্য স্তরের ব্যাঙ্কার্স কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিরঞ্জন রায় জানান, “ওই ঋণ ব্যাঙ্কগুলি দিতে বাধ্য।’’
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির বৌবাজার শাখার সাধারণ সম্পাদক সুব্রত করের অভিযোগ, “গয়না তৈরির কারখানা এক সদস্য ধার চাইলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয় নিজস্ব সম্পদ থাকতে হবে।’’ সুব্রতবাবুর বক্তব্য, সম্পদ তৈরির জন্যই তো ধার চাওয়া। মুদ্রা ঋণের লক্ষ্য সেটা বলেই জানতাম।’’
সেই সঙ্গে সকলেরই অভিযোগ, ‘‘স্বর্ণশিল্পীদের আয় নেই এখন। কেন্দ্রের প্যাকেজে অনেক সাহায্যের কথা বলা হল। কিন্তু আমরা বঞ্চিত।’’
আরও পড়ুন: সংস্থার ফল থামাতে পারে বাজারের উত্থান