ছবি সংগৃহীত
একেই করোনার হানায় খরচ বেড়েছে বিস্তর। এই অবস্থায় রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে আশঙ্কা। বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থসচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডে বলেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জিএসটি খাতে রাজ্যগুলির আয়ের ঘাটতি কেন্দ্রের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার সরকারি সূত্র জানাল, গত মার্চে জিএসটি পরিষদের বৈঠকের পরে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালও বলেছিলেন, কোনও রাজ্যের জিএসটি আদায়ে ঘাটতি হলে ক্ষতি মেটানোর দায় কেন্দ্রের নয়। জিএসটি পরিষদের।
সূত্রের খবর, সরকারই তাদের এই মুখ্য আইনি আধিকারিকের কাছে এই দায় কতটা জানতে চেয়েছিল। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এর মানে, কেন্দ্র তখনই জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পথ খুঁজতে শুরু করে। অথচ জিএসটি চালুর সময় রাজ্যের মন পেতে তাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, প্রতি বছর আদায় ১৪% বাড়বে ধরে পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের কর আদায়ের সব ক্ষতি পূরণ করা হবে।
জিএসটি-র আওতায় আদায় হওয়া সেস থেকে এই ক্ষতিপূরণ দেয় কেন্দ্র। কিন্তু অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে সেস আদায় কমছে। ২০১৯ সালের অগস্ট থেকে বাকি পড়তে শুরু করে ক্ষতিপূরণের টাকা। টানা চার মাস বাদ পড়ার পরে অগস্ট-সেপ্টেম্বরের যে টাকা অক্টোবরে দেওয়ার কথা ছিল, রাজ্যগুলির বহু ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরে কেন্দ্র তা মেটায় ডিসেম্বরে।
এখন কর আদায় আরও কমেছে। চলতি অর্থবর্ষে অতিমারি হানার পর থেকে ক্ষতিপূরণ পায়নি রাজ্যগুলি। প্রশ্ন উঠেছে, বেণুগোপালের মত জানার পরে সত্যিই কি সেই দায় থেকে হাত ধোয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার? তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মার্চে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বলেছিলেন, এই ক্ষতিপূরণের টাকা মেটাতে জিএসটি পরিষদকে বাজার থেকে ধার নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
প্রসঙ্গ জিএসটি
•জিএসটি আদায় কমার পরে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ার ব্যাপারে মোদী সরকারের ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছিল আগেই।
•মার্চে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের কাছে কেন্দ্র এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় নেই কেন্দ্রের। এই দায়িত্ব জিএসটি পরিষদের।
•অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও ইঙ্গিত দেন, আয়ের ঘাটতি মেটাতে পরিষদ বাজার থেকে ধার করতে পারে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
•জিএসটির হার বাড়িয়ে টাকা জোগাড়ের
প্রস্তাবও তোলে একাংশ।
এখন জিএসটি থেকে আয় তলানিতে রাজ্য-কেন্দ্র, দু’পক্ষেরই। ফলে রাজ্যের ক্ষতিপূরণের অঙ্কও বাড়ছে দ্রুত। অথচ করোনা যুঝতে খরচ হচ্ছে বেশি। ওই টাকা না-পেলে ভাঁড়ারে টান পড়ারও আশঙ্কা। শুধু পশ্চিমবঙ্গেরই এপ্রিল-মে’র বকেয়া ৪১৩৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালের ক্ষতিপূরণ মিটিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রের খবর, সেই হিসেব নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।