Cyclone Amphan

উধাও সিগন্যাল, ফোন নিয়ে নাজেহাল গ্রাহক

সংস্থাগুলি আগে বলেছিল, বিদ্যুৎ ফিরলে মোবাইলে ফিরবে সিগন্যাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৩:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

একে ঘরবন্দি জীবন। তার মধ্যে আমপানের ধাক্কা। ভরসা বলতে মোবাইলই। কিন্তু ঝড় সরার ছ’দিন পরেও ফোনে চোখ রেখে হতাশা আর ক্ষোভ ছাড়া কিছু জুটছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের অনেকেরই। কারণ, সিগন্যালই নেই কোথাও কোথাও। একাংশের দাবি, ‘‘পরিষেবার উন্নতি হয়েছে নামমাত্র। এখনও অনেক জায়গায় ফোন ঢুকছেই না। কখনও কল কেটে যাচ্ছে। নেট ঘাঁটতে গেলে ‘ঘুরন্ত’ সংযোগ পথের দিকে তাকিয়ে দিতে হচ্ছে ধৈর্যের পরীক্ষা। যদিও লাভ হচ্ছে না সব সময়।’’ তবে টেলিকম শিল্পের দাবি, বিদ্যুৎ ফেরায় ফোন সংযোগও স্বাভাবিক হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থাগুলির পরিষেবা নাকি ৯০% পর্যন্ত ঠিক হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএলের ৮৫%। নিজেদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই হিসেব মেলাতে গিয়ে কার্যত বাগ্‌রুদ্ধ বহু গ্রাহক।

Advertisement

সংস্থাগুলি আগে বলেছিল, বিদ্যুৎ ফিরলে মোবাইলে ফিরবে সিগন্যাল। কিন্তু দুই ২৪ পরগনা, সল্টলেক-সহ কলকাতার বেশ কিছু এলাকা, শহরতলি, পূর্ব মেদিনীপুরের অনেক অঞ্চলে গ্রাহকদের বড় অংশের অভিজ্ঞতা তা বলছে না। তাঁদের প্রশ্ন, ঘরে শেষমেষ আলো হয়তো এসেছে। কিন্তু মোবাইল-সিগন্যাল কই? বাড়ি থেকে অফিসের কাজ যখন প্রায় বাধ্যতামূলক, তখন নেট উধাও হলে চলে কী করে? অনলাইনে পড়াশোনাও লাটে উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে আটকাচ্ছে প্রশাসনিক কাজ।

সব থেকে বেশি অভিযোগ ভোডাফোন আইডিয়ার গ্রাহকদের। এয়ারটেলের ক্ষেত্রে মিশ্র। দুই সংস্থারই প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিএসএনএল ও রিলায়্যান্স জিয়োর অবস্থা তুলনায় ভাল, বলছেন একাংশ। বিএসএনএলের সিজিএম (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) আর শর্মার দাবি, ‘‘জিয়োর বহু গ্রাহক আমাদের পরিকাঠামোয় পরিষেবা পাচ্ছেন।’’ জবাব মেলেনি জিয়োরও।

Advertisement

অভিযোগ

• বিদ্যুৎ এসেছে, কিন্তু অনেক জায়গায় এখনও অচল মোবাইল-ইন্টারনেট।
• লকডাউনে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা অচল হলে উদ্বেগ বাড়ে।
• ব্যাহত ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনো ও তথ্য আদানপ্রদানের প্রশাসনিক কাজও।
• বাড়ি থেকে কাজের দফারফা অনেকেরই।
• কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, জানাচ্ছে না কেন সংস্থা?
• ডিজিটাল লেনদেন নেট ছাড়া হবে কী করে?

টেলি-শিল্পের দাবি

• বেসরকারি সংস্থাগুলির ৯০% পরিষেবা ফিরেছে।
• বিএসএনএলের ফিরেছে ৮০-৮৫%।
• বিদ্যুৎ এলেও সর্বত্র একটানা থাকছে না, ভোল্টেজও কমছে-বাড়ছে। সমস্যা তাতেই।
• ঝড়ে ও গাছ কাটতে গিয়ে বহু জায়গায় অপটিক্যাল ফাইবার কাটা পড়েছে।
• সারাইয়ের কাজে লাগানো হয়েছে বাড়তি কর্মী।
• নেওয়া হয়েছে বাড়তি কর্মীও।
• এমন বিপর্যয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগে।

কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের অধীন ও কন্ট্রোল রুমের ভারপ্রাপ্ত টার্ম সেলের (ওয়েস্ট বেঙ্গল এলএসএ) দাবি, যেখানে বিদ্যুৎ এসেছে, সেখানকার ৯৮% জায়গায় নেটওয়ার্ক ফিরেছে। তবে গাছ কাটতে ইচ্ছে করেই অনেক সময় ফের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হচ্ছে। গাছ কাটার সময় নতুন করে মোবাইলের অপটিক্যাল ফাইবার কাটা পড়াও ভোগাচ্ছে তাদের।

আরও পড়ুন: আমপান-ধ্বস্ত কবর জুড়ে মৃত গাছেরা

বিদ্যুৎ একটানা না-থাকা, ভোল্টেজে তারতম্য ও নতুন করে ফাইবারে চোটের সমস্যা তুলে ধরছেন টেলি সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআইয়ের ডিজি রাজন ম্যাথুজ়ও। তাঁর দাবি, ‘‘পরিষেবা ৯০% ফিরেছে। বেশি কর্মী লাগিয়ে দু’এক দিনে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। অনেক জায়গায় কর্মীরা বাধার মুখেও পড়ছেন। এমন বিপর্যয়ে অবস্থা পুরো স্বাভাবিক হতে কিছু সময় তো লাগবেই।’’

গ্রাহকদের প্রশ্ন, সেটা কতটা?

আরও পড়ুন: আমপানের রোষ থেকে মুক্তি পেল না বটানিক্যাল গার্ডেনও

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement