মোদী-জেটলি যখন অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলছেন, তখন রফতানির শোচনীয় হাল নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে তাঁদের সরকার।
গত অর্থ বছরে ৩৪,০০০ কোটি ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। বাস্তবে তা হয়েছে ৩১,০৫০ কোটি ডলার। চলতি বছরে তা ৩০,০০০ ডলারও ছোঁবে না বলে আশঙ্কা শিল্পমহলের। এই প্রবণতা চললে রফতানি সংস্থাগুলিতে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হবে বলে আশঙ্কা শিল্পমহলের। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছেন রফতানিকারীরা।
রফতানিকারীদের অভিযোগ, বারবার অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব দফতরকে বললেও রফতানি ক্ষেত্রের জন্য কোনও সুরাহার ব্যবস্থা করেনি তারা। বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গেও অর্থ মন্ত্রকের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসে যে লাল ফিতের ফাঁস কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, তা-ই রফতানিকারীদের সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে বলে অভিযোগ। আজ রফতানিকারীদের জাতীয় সংগঠন ফিও-র সভাপতি এস সি রলহান বলেন, ‘‘রফতানির অঙ্ক খুবই দুশ্চিন্তাজনক। রফতানিকারীদের বেঁচে থাকার জন্য এখন অক্সিজেন প্রয়োজন।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যুক্তি, বিশ্ব বাজারে মন্দা রফতানি কমার বড় কারণ। তবে রফতানিকারীদের সমস্যা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু ফিও-র ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায় বলেন, ‘‘আসলে বিশ্ব বাজারে ভারতের রফতানির ভাগ মাত্র ১.৭ শতাংশ। তাই ইউরোপে মন্দার ফলে ভারতের রফতানি যতটা না-কমছে, তার থেকেও দেশীয় সমস্যার কারণে রফতানি বেশি ধাক্কা খাচ্ছে।’’
রলহানের যুক্তি, এখনও রফতানি ক্ষেত্রে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়নি। কিন্তু যে-কারখানায় আগে ২৪ ঘণ্টা কাজ হত, এখন সেখানে ৮ ঘণ্টা কাজ হচ্ছে। কোনও শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য এক সপ্তাহের ছুটি চাইলে আমরা তাঁকে এক মাসের ছুটি দিয়ে দিচ্ছি। পরিস্থিতি এভাবেই চলতে থাকলে ঠিকা শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করতে হবে। তখন সেটা সরকারের পক্ষেও ভাল হবে না।’’
এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিকেই দায়ী করছেন রফতানিকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব দফতর নভেম্বর-ডিসেম্বরের পর থেকে রফতানির জন্য আমদানি করা কাঁচামাল ইত্যাদি খাতে কর ফেরত দেওয়া বন্ধ রেখেছে। তাঁর ফলে পুঁজির চার ভাগের এক ভাগ সরকারের ঘরে বন্দি। ঋণে সুদ গুনতে গিয়ে অর্থে টান পড়ছে রফতানিকারীদের।