প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হল ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পড়ুয়াদের জন্য ঋণদানের প্রকল্প। এ জন্য বুধবার সরকারের সঙ্গে মউ সই করেছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)। এই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষাঋণ পাওয়া যাবে। এ জন্য বন্ধক রাখতে হবে না। গ্যারান্টরের দায়িত্ব পালন করবে সরকার। সূত্রের খবর, বাকি ব্যাঙ্কগুলিও চুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেহেতু রাজ্য ঋণের গ্যারান্টর হবে, তাই মউ সই করা জরুরি।
নির্বাচনী ইস্তেহারে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্প আনার কথা বলেছিল তৃণমূল। সেই মতো জুনের শেষ থেকেই তা চালু হয়েছে বলে জানানো হয় জুলাইয়ে নতুন সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটে। তবে সূত্রের খবর, কিছু সমবায় ব্যাঙ্কে তখন থেকে ঋণের আর্জি জানানো গেলেও, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সরকারি ভাবে তা চালু হয়নি। এ দিন পানাগড়ে শিল্পতালুক উদ্বোধন করতে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও উঠে এসেছে এই চুক্তির কথা।
বুধবার রাজ্য ভিত্তিক ব্যাঙ্কার্স কমিটির আহ্বায়ক এবং পিএনবি-র জেনারেল ম্যানেজার সাক্ষীগোপাল সাহা বলেন, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হিসেবে পিএনবি-ই প্রথম রাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সূচনা করল। বুধবার মুখ্য সচিবের উপস্থিতিতে ব্যাঙ্কটির চিফ জেনারেল ম্যানেজার নবীনকুমার দাস রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ দিন থেকেই এই প্রকল্পে শিক্ষাঋণের আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক, তাদের অনুমোদিত কেন্দ্রীয় এবং জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি থেকে শিক্ষাঋণ পাওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ঋণ বাবদ টাকা বাকি পড়লে গ্যারান্টর হিসেবে ব্যাঙ্কগুলিকে বকেয়া মেটাবে রাজ্য। সুদে ভর্তুকিও দেবে তারা। যার আওতায় ব্যাঙ্কগুলি যে হারই স্থির করুক না-কেন, ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৪% সুদ। মহিলাদের ক্ষেত্রে সুদে অতিরিক্ত ৫০ বেসিস পয়েন্ট ছাড় পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, এই প্রকল্পে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কোনও আগাম টাকা (মার্জিন মানি) দিতে হবে না গ্রহীতাকে। তবে তার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে ৫% টাকা দিতে হবে। ঋণ শোধ শুরু করতে হবে পাঠ্যক্রম শেষ হওয়ার অথবা চাকরি পাওয়ার এক বছর পর থেকে। এ ক্ষেত্রে দু’টির মধ্যে যেটা আগে হবে, সেই সময়ই ধরা হবে। তবে ব্যাঙ্কিং শিল্প সূত্রের খবর, শিক্ষাঋণ পাওয়ার জন্য অন্যান্য যে যোগ্যতা লাগে, এই প্রকল্পেও সেগুলি পূরণ করতে হবে পড়ুয়াকে।
এমনিতে বর্তমানে চালু থাকা সাধারণ শিক্ষাঋণে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ধার নিলে গ্যারান্টর অথবা বন্ধকের প্রয়োজন নেই। তার উপরে এবং ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে গ্যারান্টর লাগে। তার বেশি টাকা ঋণের ক্ষেত্রে বন্ধক এবং অনেক সময় গ্যারান্টর দুই-ই দাবি করে ব্যাঙ্ক।