রেপো রেট আর না বাড়াতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে আর্জি জানাল আবাসন ক্ষেত্রের সংগঠন ক্রেডাই। প্রতীকী ছবি।
মূল্যবৃদ্ধি এখনও তাদের সহনসীমার উপরে। সে ক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহে ঋণনীতির বৈঠকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ফের সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটবে কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে বাজারে। তবে তার আগে রেপো রেট (ব্যাঙ্কগুলিকে স্বল্প মেয়াদে যে সুদে ঋণ দেয় আরবিআই) আর না বাড়াতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে আর্জি জানাল আবাসন ক্ষেত্রের সংগঠন ক্রেডাই। তাদের দাবি, না হলে নির্মাতা ও ক্রেতার খরচ আরও বাড়বে। ধাক্কা খাবে আবাসনের চাহিদা।
ভারত-সহ গোটা বিশ্বেই চড়া মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে গত বছর থেকে টানা সুদ বাড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সম্প্রতি আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভ ফের সেই পথে হাঁটায় ভারতেও জল্পনা বাড়ছে। হাউসিং ডট কমের সিইও ধ্রুব আগরওয়াল মনে করছেন, এখনই পুরোপুরি দাঁড়ি না টেনে আরবিআই হয়তো এ বারে সুদের হার কম বাড়াবে।
সুদ বাড়লেও আবাসন ক্ষেত্রের দাবি ছিল, সে ভাবে ধাক্কা লাগেনি। ক্রেডাইয়ের কর্তারাও বলেছিলেন, যে ধাক্কা লাগবে, সেটা সাময়িক। তবে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন পতোদিয়া বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সুদ বৃদ্ধির জন্য এক বছরে নির্মাণ খরচ দ্রুত বেড়েছে। যা অনেকের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তা ফের বাড়লে কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুধু আর্থিক দিক থেকে অসম্ভব হবে তা-ই নয়, আগ্রহীদের বাড়ি কেনাতেও বাধা তৈরি করবে।’’
গত এক বছরে ফ্ল্যাটের দাম ৫%-৬% বেড়েছে। এই তথ্য জানিয়ে ক্রেডাইয়ের দাবি, এখন ফের সুদ বাড়লে প্রকল্পের খরচ ও ফ্ল্যাটের দাম আরও বাড়বে। সংস্থার মুনাফা কমবে।
পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতার মতে, আবাসন ক্ষেত্র এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যাতে আর এক দফা সুদ বাড়লে তা ধাক্কা খাবে। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘গত এক বছরেরও কম সময়ে সুদ বেড়েছে ২৫০ বেসিস পয়েন্ট। আগে দাম বাড়লেও ফ্ল্যাট বিক্রি হলে হয়তো নির্মাতার মুনাফা কমত। কিন্তু এখন তা আরও বাড়লে ক্রেতা যদি ফ্ল্যাটই না কেনেন, সে ক্ষেত্রে আয় ধাক্কা খাবে।’’ রাজ্যে এখনও স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন খরচে ছাড় বহাল রয়েছে। তা প্রশংসনীয় জানিয়েও তাঁর বক্তব্য, সুদ বৃদ্ধির প্রভাব সেই সুবিধাকেও কার্যত ছাপিয়ে গিয়েছে।
টানা সুদ বৃদ্ধি বাজারে ক্রেতার মানসিকতাকে ধাক্কা দিতে পারে বলে মত সিগনেচার গ্লোবালের চেয়ারম্যান প্রদীপ আগরওয়াল, কোলিয়ার্স ইন্ডিয়ার গবেষণা ক্ষেত্রের প্রধান বিমল নাদার প্রমুখেরও। তবে মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে আরবিআইয়ের সামনে বিকল্প পথ কী, চর্চা চলছে তা নিয়েও।