প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক বৃদ্ধির রথের চাকায় যখন সবেমাত্র গতি আসবে বলে ভাবা হচ্ছিল, ঠিক তখনই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশে। ২.১৭ লক্ষ দৈনিক সংক্রমিত নিয়ে অর্থনীতি এখনই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করতে পারে কি না, প্রশ্ন সেটাই। যার উত্তর খুঁজতে সংক্রমণের প্রভাব নিয়ে কাঁটাছেঁড়া চলছে। এই অবস্থায় শুক্রবার ব্রোকারেজ সংস্থা ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা (বিঅফএ) সিকিউরিটিজ় বলল, অর্থনীতির ফের চাঙ্গা হওয়ার পথে বাড়তে থাকা সংক্রমণ ঝুঁকির তো বটেই। সেই সঙ্গে গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ৩% জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। অর্থনীতি ছন্দে ফিরছে আশ্বাস দিয়ে দীর্ঘ ন’মাস ধরে সঙ্কোচন দেখানোর পরে ডিসেম্বরে যে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিঅফএ নিজেই। যদিও আজ মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যনের দাবি, গত বছরের চেয়ে এ বার অনিশ্চয়তা কম। অর্থনীতিও তুলনায় অনেক ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে।
শিল্প থেকে আমজনতা, চলতি অর্থবর্ষে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় সকলেই। সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে কেন্দ্রের আশ্বাসও এসেছে বারবার। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে তাতে জল ঢালতে পারে, সম্প্রতি তা মেনেছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। তবে একই সঙ্গে কথা দিয়েছেন, দেশের বৃদ্ধি বহাল রাখতে সব চেষ্টা তাঁরা। কিন্তু হু হু করে বাড়তে থাকা সংক্রমণ সেই সুযোগ দেবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে সংশ্লিষ্ট মহলে। বিশেষত মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যকে যেখানে স্থানীয় ভাবে লকডাউনের পথেও হাঁটতে হয়েছে।
বিঅফএ বলেছে, বৃদ্ধির গতি দুর্বল। এই অবস্থায় করোনার আক্রমণ, ফের আর্থিক কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়া ও ঋণের বৃদ্ধি আটকে যাওয়া তাকে আরও শ্লথ করতে পারে। ফলে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছেই। সংস্থাটির দাবি, সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে এক মাসের লকডাউন করতে হলে জিডিপি থেকে ১০০-২০০ বেসিস পয়েন্ট উধাও হবে।
গত অর্থবর্ষের মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির পূর্বাভাস অর্জন করা সম্ভব হবে না জানালেও, জিডিপি ঠিক কোথায় দাঁড়াতে পারে জানায়নি বিঅফএ।
রিপোর্ট বলছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ডের গতি বিশ্লেষণের জন্য বিঅফএ সিকিউরিটিজ়ের ৭টি উপাদান কমে ১% হয়েছে। বছরের প্রথম মাসে ছিল ১.৩%। তাদের দাবি, ৪টি কর্মকাণ্ডের সূচকই মন্থর হয়েছে।