Coronavirus

বিশ্বে কাজ যাবে অর্ধেকের! আশঙ্কা বাড়ছে ভারতেও

সমস্যার ছায়া লম্বা ভারতেও। যে দেশে ৯০ শতাংশের বেশি কর্মী অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন, সেখানে এই সঙ্কট তীব্র হওয়াই স্বাভাবিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২০ ০৩:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রতি দু’জনে এক জন!

Advertisement

করোনার ‘বিষাক্ত’ ছোবলে বিশ্বের অর্ধেক কর্মী কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। যার মধ্যে সব থেকে দুর্দশা অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের। রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখা সংস্থাটির হুঁশিয়ারি, সমস্ত দেশ এক যোগে এখনই এই সমস্ত কর্মীর পাশে না-দাঁড়ালে, কার্যত শেষ হয়ে যাবে তাঁদের জীবন। প্রশ্নের মুখে পড়বে ৪৩ কোটিরও বেশি সংস্থার অস্তিত্ব। ভারতেও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের দিকে ছুটে আসা এই ঝড় আঁচ করে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে বার বার সওয়াল করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

আইএলও-র হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবীতে মোট কর্মী ৩৩০ কোটি। তার মধ্যে ২০০ কোটিই অসংগঠিত ক্ষেত্রে। তাদের আশঙ্কা, করোনার সুনামি কাজ কেড়ে নিতে পারে ১৬০ কোটি জনের। যা মোট কর্মীর প্রায় অর্ধেক। সব থেকে কঠিন পরিস্থিতির মুখে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা। যাঁদের বহু জন কাজ খুইয়েছেন। আরও অনেকে খোয়ানোর মুখে। আইএলও-র ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডারের কথায়, “কোটি-কোটি কর্মীর ক্ষেত্রে রোজগার না-থাকা মানে খাবার, নিরাপত্তা এমনকি ভবিষ্যৎ বলেই কিছু না-থাকা।… না এঁদের সঞ্চয় আছে, না ধার নেওয়ার জায়গা।… এই মুহূর্তে বিশ্বে কাজের বাজারের এটাই ছবি।” এখনই পাশে না-দাঁড়ালে, এঁদের পক্ষে বেঁচে থাকাই কঠিন হবে বলে সাবধান করেছেন তিনি।

Advertisement

আইএলও-র রিপোর্ট

• পৃথিবীতে কর্মীর সংখ্যা ৩০০ কোটি।

• ২০০ কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের।

• করোনা কাজ কাড়তে পারে ১৬০ কোটির।

• অস্তিত্ব সঙ্কটে ৪৩ কোটি সংস্থা।

বিশ্ব জুড়ে কাজের বাজারের ছবি এমন ভয়ঙ্কর কেন, তা স্পষ্ট আইএলও-র সমীক্ষাতেই। তা অনুযায়ী, করোনার জেরে দুনিয়া জুড়ে কল-কারখানা, অফিস-কাছারি দীর্ঘ দিন বন্ধ। উৎপাদন নামমাত্র। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা অজানা। খুচরো ব্যবসা, উৎপাদন শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবল সমস্যায় ৪৩.৬০ কোটি সংস্থা। বিশেষত খাবি খাচ্ছে ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি। অথচ সারা দুনিয়াতেই বেশির ভাগ কর্মী কাজ করেন এই ধরনের সংস্থায়। তাই এদের চাকা পুরোদমে না-ঘুরলে, কর্মীদের কাজ খোয়ানো ক্রমশ বাড়বে বলে আশঙ্কা। বিশেষত যেখানে করোনার জেরে নষ্ট হওয়া কাজের সময় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৩০ কোটিরও বেশি পূর্ণ সময়ের কর্মীর কাজ যাওয়ার সমান।

আরও পড়ুন: পরিকাঠামো দেখল নজিরবিহীন সঙ্কোচন

সমস্যার ছায়া লম্বা ভারতেও। যে দেশে ৯০ শতাংশের বেশি কর্মী অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন, সেখানে এই সঙ্কট তীব্র হওয়াই স্বাভাবিক। তা বুঝে সরকারকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি বার বার জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন— সকলেরই পরামর্শ, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের অন্তত টিকে থাকার ব্যবস্থাটুকু করুক সরকার। কাজ খোয়ানো কিংবা সেই বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দরিদ্র কর্মীদের পরিবারকে রেশন মারফত খাবার জোগানো হোক। তাঁদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হোক ন্যূনতম অঙ্ক। যাতে তাকে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে নতুন কাজ খুঁজে নেওয়ার আগে পর্যন্ত অন্তত ভেসে থাকতে পারেন তাঁরা। কিন্তু অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা-সহ যে ত্রাণ প্রকল্প কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য বলে বিরোধীদের অভিযোগ।

আরও পড়ুন: চিন থেকে মুখ ফেরানো লগ্নি টানতে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement