প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
করোনা সংক্রমণ রুখতে গিয়ে যে ভাবে আর্থিক কর্মকাণ্ডে তালা পড়েছে, তাতে বেকারত্ব কোথায় পৌঁছবে তা ভেবেই শিউড়ে উঠছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এমন থমকে থাকা অবস্থার সব থেকে বেশি মাসুল গুনবেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছেন মোদী। শুনেছেন শিল্পের কথাও। অর্থনীতিবিদদের আর্জি, অসংগঠিত শ্রমিকদের বেহাল দশা বুঝে সার্বিক পদক্ষেপ করতে এ বার তিনি বৈঠকে ডাকুন ইউনিয়নগুলিকে। কারণ ‘মাঠের’ খবর অনেক বেশি রাখে তারা।
কেন্দ্র কর্মী, বেতন ছাঁটাই না-করার কথা বললেও, অভিযোগ লকডাউন ঘোষণার পরে বহু ঠিকাকর্মীর চাকরি গিয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অবস্থা তেমনই হওয়ার আশঙ্কা। জামশেদপুরে এক্সএলআরআইয়ের অধ্যাপক কে আর শ্যামসুন্দরের মতে, ৪৬.৫ কোটি কর্মীর মধ্যে করোনা-হানায় কাজ হারিয়েছেন বা সেই ভয়ে আছেন ৩-৫ কোটি। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র হিসেবে বেকারত্ব প্রায় ২৪% বেড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকেরা এর মধ্যে না- থাকলে কর্মহীনের তা আরও বাড়বে।
শ্যামসুন্দরের দাবি, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন এই সঙ্কট যুঝতে সামাজিক আলোচনার পক্ষে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও শিল্পের পাশাপাশি বড় ভূমিকা নেয় ইউনিয়নগুলিও। কারণ, তারা সেই সব শ্রমিকদের সমস্যার কথা ভাল জানে। উপযুক্ত ত্রাণ প্রকল্প রূপায়নে যে তথ্য জরুরি।
সহমত আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায়। বলছেন, ‘‘লকডাউনে সব থেকে বিপদে পড়া দৈনিক মজুর, পরিযায়ী কর্মীদের মুখপাত্র কারা হবেন? বিপুল অসংগঠিত ক্ষেত্রের সমস্যা ও প্রয়োজনে শীর্ষ স্তরে পৌঁছতেই ইউনিয়নকেও ডাকা জরুরি।’’ তাঁর মতে, কৃষি ক্ষেত্রে বহু পরিযায়ী কর্মী নিজের জায়গায় ফিরে গিয়েছেন। অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাঁদের ফেরানো জরুরি। কারণ, এখন মজুত ভান্ডার দিয়ে কাজ চললেও খাদ্যশস্য উৎপাদনের সময় তাঁদের লাগবে। একই কথা খাটে অন্য শিল্পেও। না-হলে সার্বিক ভাবেই অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র যে পিএম-কেয়ার্স তহবিল গড়েছে, তার অছি বা পরামর্শদাতা পরিষদেও ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের রাখতে কেন্দ্রকে আর্জি জানান শ্যামসুন্দর।