প্রতীকী ছবি।
ঘন কালো মেঘের মধ্যে থেকে সূর্য এক ঝলক উঁকি মেরেছিল গত সপ্তাহে। করোনা ও তাকে যুঝতে সারা দেশ যখন ঘরবন্দি এবং অর্থনীতির বিষম সঙ্কট আঁচ করে বাজারে যখন নাগাড়ে পড়ছে, তখন আচমকাই আগের মঙ্গলবার সকলকে অবাক করে সেনসেক্স বাড়ে ২৪৭৬ পয়েন্ট। পুনরুদ্ধার হয় লগ্নিকারীদের ৭.৯ লক্ষ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার ওঠে ১২৬৬ পয়েন্ট। ঢোকে ৩১ হাজারের ঘরে। বাড়ে শেয়ার নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ডগুলির (ইকুইটি ফান্ড) ন্যাভ-ও।
তবে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা না-ভাবাই ভাল। এই লাফ করোনা মোকাবিলা ও শিল্পে প্রাণ ফেরাতে কিছু দেশের মোটা তহবিলে সায়ের কারণে। তাতে জ্বালানি জুগিয়েছে ভারতেও শিল্পের জন্য বড় ত্রাণ ঘোষণার আশা। ফলে এই স্বস্তি সাময়িকই।
বরং সমস্যার শিকড় গভীরে ছড়াচ্ছে। বিশ্বে শিল্প-বাণিজ্য স্তব্ধ। চাহিদা নেই। উৎপাদন হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি থেকে আশু মুক্তির সম্ভাবনা নেই। লকডাউন ছাড়া করোনা ঠেকানোর বিকল্প পথ নেই। অথচ ভাইরাস ঠেকাতে তার মেয়াদ যত বাড়বে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেবে তত বেশি। শেয়ার বাজারের এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যদি কেউ সাহস করে প্রতিটি পতনে একটু করে ভাল শেয়ার কিনে লগ্নি করতে পারেন, তা হলে আগামী দিনে সফল লগ্নিকারীর তকমা পেতে পারেন তিনি। তবে সেই লগ্নি হতে হবে আরও অনেকখানি লম্বা মেয়াদের। ধৈর্য ধরতে হবে। আর অবশ্যই লাগবে ঝুঁকি বইবার ক্ষমতা।
(মতামত ব্যক্তিগত)
উদ্বেগ বাড়িয়েছে
• আইএমএফের বার্তা, বিশ্ব মন্দার কবলে। ত্রিশের দশকের মহামন্দার (গ্রেট ডিপ্রেশন) পরে সব থেকে খারাপ আর্থিক পরিস্থিতি।
• কিছু মূল্যায়ন সংস্থা এই অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.৫-২ শতাংশে নামিয়েছে।
• আইএলও-র দাবি, ভারতে চরম দারিদ্রে পড়তে পারেন ৪০ কোটি মানুষ।
• মার্চে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৭%। যা ৪৩ মাসে সর্বাধিক। শুধু লকডাউন পর্বেই বেকারত্ব ছাড়িয়ে গিয়েছে ২৩%।
• রফতানি স্তব্ধ থাকায় ১.৫ কোটি মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কা।
• গাড়ি শিল্পের ভয়, বিক্রি কমতে পারে ২০%-২৫%।
• টাকার দাম পড়ছে। এক ডলার বেড়ে ৭৬.২৮ টাকা।
• দুশ্চিন্তা বাড়ছে, কতটা কমবে কেন্দ্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বাবদ আয়?
• লকডাউন আপাতত ২ সপ্তাহ বেড়েছে। আরও বাড়লে কোথায় পৌঁছবে শিল্প-বাণিজ্য-কর্মসংস্থানের দুরবস্থা?