প্রতীকী ছবি।
দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার সময়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, অর্থনীতিকে এর মাসুল গুনতে হতে পারে। আর বুধবার ব্রিটিশ ব্রোকারেজ সংস্থা বার্কলেজ় সমীক্ষায় জানাল, সম্ভাব্য সেই ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৯ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে এক ধাক্কায় অনেকটা কমবে বৃদ্ধির হার। সূত্রের খবর, এই ধাক্কা সামলাতে অন্তত ১.৫ লক্ষ কোটির ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করতে চলেছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থ মন্ত্রক এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মধ্যে আলোচনা চলছে।
বার্কলেজ়ের সমীক্ষায় ধরা হয়েছে, দেশে চার সপ্তাহ সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে। আংশিক লকডাউন চলবে আরও প্রায় আট সপ্তাহ। অর্থাৎ, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের প্রায় পুরো সময় তার প্রভাব থাকবে। এতে ২০২০ সালের বৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশে নামতে পারে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তা হতে পারে ৩.৫%। রিপোর্টে দাবি, কেন্দ্র মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে লকডাউন কার্যকর করলেও, বিভিন্ন রাজ্য তার আগে থেকেই তা শুরু করেছিল। যার জেরে অর্থনীতির ক্ষতির বহর দাঁড়াতে পারে ৯ লক্ষ কোটি টাকা। তার মধ্যে শুধু কেন্দ্রের লকডাউনেই ৭ লক্ষ কোটি। মূল্যায়ন সংস্থা কেয়ার রেটিংস বলছে, চলতি অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ১.৫%-২.৫%। বস্তুত, মন্দার আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে সারা বিশ্বে। ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক রিসার্চ জানিয়েছে, এ বছর জার্মানির অর্থনীতি ২০% পর্যন্ত কমতে পারে।
আশঙ্কা
• লকডাউনে অর্থনীতির সম্ভাব্য ক্ষতি ৯ লক্ষ কোটি টাকা। জিডিপির ৪%।
• শুধু কেন্দ্র ঘোষিত লকডাউনেই লোকসান প্রায় ৭ লক্ষ কোটি।
• ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার হতে পারে ৩.২%।
(সমীক্ষা: বার্কলেজ়)
সম্ভাব্য পদক্ষেপ
• কেন্দ্রের ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প।
• ১০ কোটি দরিদ্রের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা।
• বাজার থেকে আরও বেশি ধার সরকারের।
• ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম ঋণনীতিতে ৬৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
• সারা বছরে আরও ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাই।
এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘আগে মহামারির মোকাবিলা হোক। তার পরে অর্থনীতির ক্ষতির হিসেব কষা হবে। বিভিন্ন রাজ্য নিজেদের মতো ত্রাণের ব্যবস্থা করছে। কেন্দ্রও এ ব্যাপারে ভাবছে।’’ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষে অন্তত ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ ঘোষণা করা হতে পারে। দরিদ্রদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়া, শিল্পকে সাহায্য-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকতে পারে। ফলে কার্যত অসম্ভব হতে পারে রাজকোষ ঘাটতিকে বাজেটে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখা। আর এপ্রিলের গোড়ায় আগামী অর্থবর্ষের প্রথম ঋণনীতিতে ৬৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সারা বছর ধরে আরও ১০০ বেসিস পয়েন্ট। মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলার আশঙ্কা থাকলেও।