ছবি: সংগৃহীত।
দেশের বাজারে এই মার্চে তার আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে গাড়ি বিক্রি। তবে গত বছরের মার্চের সঙ্গে তুলনা করলে সার্বিক বিক্রি কমেছে প্রায় ২৮%। শুধু দু’চাকার বিক্রিই কমেছে ৩৫%। একই অবস্থা তিন চাকা এবং বাণিজ্যিক গাড়ির। সেগুলির বিক্রি কমেছে যথাক্রমে প্রায় ৫০% এবং ৪২%। বৃহস্পতিবার গাড়ি ডিলারদের সংগঠন ফাডার এই হিসেব সামনে আসতেই ফের মাথাচাড়া দিল একাংশের ব্যবসায় টিকে থাকা নিয়ে আশঙ্কা। যার প্রধান কারণ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার দরুন ফের বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় স্তরে আংশিক লকডাউন, বিধিনিষেধ। সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ার জেরে চাহিদায় আবার ভাটা পড়ার ভয়ও। তবে যাত্রিবাহী গাড়ি ও ট্র্যাক্টরের বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ২৮% এবং ২৯%।
বস্তুত, এক বছর আগের স্মৃতি এখনও তাজা। শুনশান শো-রুম, বিক্রি না-হয়ে পড়ে থাকা গাড়ি, ব্যবসা উধাও হওয়ায় ঝাঁপ বন্ধ করতে বাধ্য হওয়া ডিলার সংস্থা, হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই। লকডাউন ওঠার পর থেকে প্রতি মাসে বিক্রি একটু করে বাড়লেও, তা করোনা-পূর্ব সময়ের ধারেকাছে ফেরেনি। যে সময় অর্থনীতির ঝিমুনিতে এমনিতেই খোঁড়াচ্ছিল গাড়ির বিক্রিবাটা।
সংক্রমণের নতুন ঝাপটায় তাই গাড়ির ডিলারদের মধ্যে এখন ফিরছে সংশয়, অদূর ভবিষ্যতে ব্যবসা এমন ভাবেই প্রতি মাসে বাড়তে বাড়তে ছন্দে ফেরার পথ পাবে তো! তার উপরে সেমিকন্ডাক্টরের মতো কিছু যন্ত্রাংশের জোগান সঙ্কট পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করেছে। ফাডা-র মতে, গত কয়েক মাসে যেটুকুও বা বৃদ্ধির মুখ দেখেছিল ভারত, তা-ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল এ বার। এপ্রিলের বিক্রি তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ধাক্কা বহাল
বিক্রির হিসেব ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় গত মার্চে—
ডিলারদের সংশয়
ফের সংক্রমণ দ্রুত ছড়ানোয়—
ফাডা-র প্রেসিডেন্ট ভিঙ্কেশ গুলাটি মনে করাচ্ছেন, গত বছরের মার্চের শেষ সাত দিন লকডাউন ছিল। অর্থাৎ, এ বার পুরো মাস ব্যবসা হলেও আগের বারের চেয়ে সার্বিক গাড়ি বিক্রি কমার উদ্বেগ তাঁদের বার্তায় স্পষ্ট। দেশের মানুযের আর্থিক অবস্থা বোঝাতে গিয়ে তাঁরা উল্লেখ করেছেন ‘পিউ রিসার্চে’র সমীক্ষাকে। যা জানিয়েছে, করোনার ধাক্কায় প্রায় ৩.২০ কোটি ভারতীয় আয় কমায় নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে নেমে এসেছেন। তার উপরে গাড়ি ও তেলের দাম বেড়েছে। ফলে সব থেকে মার খেয়েছে দু’চাকা। বিশেষত কম দামি।
তথ্য বলছে, এপ্রিলে গাড়ির চাহিদা এমনিতে কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সংক্রমণ বৃদ্ধি তাতে জল ঢেলেছে। শো-রুম থেকে বিক্রির ১০-১১% হয় শুধু মহারাষ্ট্রেই। স্থানীয় লকডাউনে যা বানচাল হতে পারে। যদিও কেন্দ্রের আশ্বাস, পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের আর প্রশ্নই ওঠে না। আর আরবিআইয়ের দাবি, যে কোনও মূল্যে অর্থনীতির অগ্রগতি নিশ্চিত করা হবে। গাড়ি শিল্পের ভরসা আপাতত এটুকুই।