চিনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পরেই চিন্তায় পড়েছিল বৈদ্যুতিন ও ওষুধ শিল্প। কারণ, মোবাইল থেকে চিকিৎসার যন্ত্র, গৃহস্থালির বৈদ্যুতিন সামগ্রী থেকে ওষুধের কাঁচামাল— এ সবের সিংহভাগই আসে চিন থেকে। ভবিষ্যতে চিনের উপরে নির্ভরতা কাটাতে আজ এই দুই ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করল মোদী সরকার। বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রের জন্য তিন প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৪৮,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে। ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রে সেই অঙ্ক প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আজ তা ঘোষণার পরে কেন্দ্রের দাবি, এর ফলে পাঁচ বছরে শুধু চিনের উপর নির্ভরতা কমবে, তা নয়। ভারত থেকে বৈদ্যুতিন পণ্য ও ওষুধ বিদেশেও রফতানি হবে। সেগুলির কারখানা গড়তে পার্ক তৈরি হবে। তাতে নতুন লগ্নি আসবে। বাড়বে কর্মসংস্থানও। উল্লেখ্য, উহানে করোনার দাপট শুরুর পরেই চিন থেকে বৈদ্যুতিন পণ্য ও ওষুধের কাঁচামাল (এপিআই) আমদানিতে ধাক্কা লেগেছিল। তখনই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠকে বণিকসভার কর্তারা পরামর্শ দেন, এই সুযোগ নিয়ে দেশীয় শিল্পকে চাঙ্গা করা যেতে পারে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, চিকিৎসার যন্ত্রপাতির তৈরির জন্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উৎসাহ প্রকল্প (প্রোডাকশন লিঙ্কড ইন্সেন্টিভ) দেওয়া হবে। এই সব পণ্যের কারখানার পার্ক তৈরিতে আর্থিক সাহায্য করবে কেন্দ্র। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওষুধ শিল্পের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মোদী বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় ওষুধ শিল্পকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। ওষুধের জোগান, মেডিক্যাল কিট, যন্ত্রপাতির জোগান যাতে অব্যাহত থাকে, তা-ও দেখতে হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ওষুধের কালোবাজারি ও বেআইনি মজুত রুখতে খুচরো বিক্রেতাদের নজর রাখতে হবে। সার-রসায়নমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যের দাবি, বাজারে ওষুধের কোনও অভাব নেই।
বৈদ্যুতিন, যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি
মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘বড় মাপের বৈদ্যুতিন পণ্যের কারখানার জন্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উৎসাহ প্রকল্পে সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা।’’ কেন্দ্রের মতে, এই প্রকল্পে দেশীয় ও অ্যাপলের মতো বিদেশি ফোন সংস্থা লাভবান হবে ও তার সুযোগ নিতে এ দেশে নতুন কারখানা তৈরি করবে।
পাশাপাশি, বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির যন্ত্রাংশ উৎপাদনে মূলধনী খরচে ২৫% উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে। এতে খরচ ৩২৮৫ কোটি। শিল্পগুচ্ছ তৈরির জন্যও আর্থিক সাহায্য দেবে কেন্দ্র। যাতে খরচ হবে প্রায় ৩৭৬২ কোটি। ৩০০ একর জমিতে তা তৈরি হবে। তার মধ্যে উত্তর-পূর্ব ও পার্বত্য এলাকায় ১০০ একর জমি থাকবে।