কেন্দ্র ও পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ১ এপ্রিল থেকে দেশে ভারত স্টেজ-৪ (বিএস-৪) দূষণ বিধির গাড়ি বিক্রি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অর্থনীতির ঝিমুনির পরে বিক্রিতে থাবা বসিয়েছে করোনার সংক্রমণ। প্রায় ৬৩৫০ কোটি টাকার বিএস-৪ গাড়ি পড়ে শো-রুমগুলিতে। মঙ্গলবার রাত থেকে আরও ২১ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করায় ওই সময়সূচি ও মজুত বিএস-৪ গাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ী গাড়ি শিল্প। তাদের একাংশের প্রশ্ন, বিক্রি বন্ধ। এগুলির মজুত খালি হবে কী করে? তাদের ভয়, বিএস-৪ ফুরোনোর আগেই বিএস-৬ বিক্রি বাধ্যতামূলক হবে কি না বোঝা যাচ্ছে না। যদি তা হয়, তবে বিপদে পড়বেন অনেকেই। লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা মানলেও, ডিলাররা এই সঙ্কটের প্রেক্ষিতে ওই সময়সূচি পিছনোর আর্জি জানিয়েছেন।
গত বছর থেকেই বহু সংস্থা বিএস-৪ তৈরি কমিয়ে বিএস-৬ গাড়ি তৈরি শুরু করেছিল। তবে ডিলারদের সংগঠন ফাডার দাবি, চাহিদার অভাবে অনেকগুলিই এখনও পড়ে। তার উপরে থাবা বসিয়েছে করোনা। বিভিন্ন রাজ্যে কিছু গাড়ির সাময়িক ‘রেজিস্ট্রেশন’ হলেও ৩১ মার্চের মধ্যে সেটা চূড়ান্ত না-হলে, তা-ও বাতিল হবে। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ওই সময়সীমা পিছোতে ফাডা ও কিছু সংস্থা ফের সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায়। ফাডার সিইও সহর্ষ দামানি ও পশ্চিমবঙ্গের চেয়ারপার্সন সিদ্ধার্থ ভাণ্ডারি এবং মোটর ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান ভি নায়ারের দাবি, লকডাউন জরুরি ঠিকই, তবে বছর দেড়েক ধরে গাড়ি বিক্রিতে মন্দা চলছে। যেহেতু এখন মজুত গাড়ি বিক্রির সম্ভাবনা নেই, তাই সময়সীমা না-বাড়লে বিপুল ক্ষতি গুনবেন ডিলাররা। তাঁদের আশা, দেশে লকডাউন চললেও সুপ্রিম কোর্টে হয়তো জরুরি ভিত্তিতে কিছু মামলার শুনানি হবে। কার্যকরী মূলধনের জন্য নেওয়া ঋণ মেটানোর সময়সীমা ৩১ মার্চের থেকে বাড়ানো ও আর্থিক ত্রাণের আর্জিও জানান সিদ্ধার্থ।
বিএস-৪ গাড়ির জমে থাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের ডিজি রাজেশ মেনন-ও। তবে সূত্রের খবর, যারা এখন শুধুই বিএস-৬ গাড়ি তৈরি করছে, তাদের অনেকেই বিএস-৪ গাড়ি বিক্রির সময় বাড়ানোর বিপক্ষে। যুক্তি, নিয়ম মেনে বিএস-৪ তৈরি বহু আগে বন্ধ করেছে তারা। তবে অন্য অংশের পাল্টা দাবি, ব্যবসার সঙ্কটে সেই সব বিএস-৪ গাড়িও বিক্রি হয়েছে এমনটা হলফ করে বলা যায় না। ডিলাররা অবশ্য বিতর্ক সরিয়ে আপাতত ‘বাঁচার’ পথ খুঁজছেন।