প্রতীকী ছবি
মাসের শুরুতে সোনার দাম রকেট গতিতে বাড়তে থাকায় ধাক্কা খেয়েছিল গয়নার বিক্রি। ক্রেতার অভাবে মাথায় হাত পড়েছিল গয়না ব্যবসায়ীদের। প্রমাদ গুনছিলেন সোনার কারিগরেরা। আশা ছিল, আসন্ন বিয়ের মরসুমে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর। সেই জন্য দাম কমার অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই প্রত্যাশায় থাবা বসাল করোনাভাইরাস। যার জেরে এখন দাম কিছুটা কমে এলেও, বিক্রি নিয়ে সেই আশঙ্কাতেই ভুগছে স্বর্ণ শিল্প মহল।
অভিজ্ঞতা বলে, শেয়ার বাজার পড়লে বাড়ে সোনার দাম। কিন্তু এ বার দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। ৬ মার্চ কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) ৪৫,০০০ টাকা ছাড়িয়েছিল। শুক্রবার ধরলে দাম কমেছে ৩১৮০ টাকা। একই ছবি গয়নার সোনার (২২ ক্যারাট) ক্ষেত্রেও। তা কমেছে ৩০২০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, করোনার আতঙ্কে মানুষ বেরোচ্ছেন না। তাই দাম কমলেও বাজার শুনশান।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া ও স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে-র বক্তব্য, ‘‘করোনার জেরে বাজায় পড়ায় লগ্নিকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন। আর লেনদেন বাড়ায় সে জন্য অতিরিক্ত মার্জিন মানির (লেনদেনের জন্য আগাম জমা টাকা) সংস্থান করতে তাঁদের সোনা বিক্রি করতে হয়েছে। যা বিশ্ব বাজারে পতন ডেকে এনেছে সোনার দামে।’’ অথচ সেই করোনার কারণেই আবার সাধারণ মানুষের রাস্তায় বেরোনো প্রায় বন্ধ হয়েছে। তাই দাম কমলেও আগামী বিয়ের মরসুমের জন্যও কেনাকাটা করতে আসছেন না তাঁরা। ফলে বিক্রি ধাক্কা খাচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক গোল্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেন বলেন, ‘‘করোনা তো আছেই। তার উপরে বিয়ে না-থাকায় এমনিতে প্রতি বছর চৈত্রে গয়না বিক্রি কমে। তা ছাড়া মার্চ হল অর্থবর্ষের শেষ মাস। এ মাসে আয়করদাতারা কর মেটাতে ব্যস্ত থাকেন। এ ছাড়া বেশ কিছু দিন ধরে ডলারের দাম বাড়াতে লগ্নিকারীদের মধ্যে অনেকেই সোনা না-কিনে বিদেশি মুদ্রায় টাকা ঢালছে।’’
সব মিলিয়ে আপাতত করোনা আতঙ্ক কাটার অপেক্ষায় স্বর্ণ শিল্প।