—প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বিমায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি বা এফডিআইয়ের ঊর্ধ্বসীমা এখনকার ৭৪% থেকে বাড়িয়ে ১০০% করার প্রস্তাব দিতেই জল্পনা দানা বেঁধেছে দেশ জুড়ে। এক দিকে, এর পক্ষে-বিপক্ষে চড়ছে বিতর্কের সুর। অন্য দিকে, সংসদের চলতি অধিবেশনেই এ জন্য বিমা আইন সংশোধনের বিল পাশ করানো সম্ভব হবে কি না, তাই নিয়ে তুঙ্গে উঠছে চর্চা। এই পরিস্থিতিতে বিমা শিল্পের কর্মী ইউনিয়নগুলির একাংশ এই ক্ষেত্রে পূর্ণ বিদেশি মালিকানার পথ খুলে দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই বিমা সংস্কারের নামে বিদেশি বহুজাতিকগুলিকে দেশে প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। ভারতের মতো সম্ভাবনাময় বাজারে থাবা বসাতে ওঁৎ পেতে রয়েছে যারা। এ বারও পরিকল্পনা সফল হতে দেওয়া যাবে না।
শনিবার জীবন বিমা শিল্পের কর্মী ইউনিয়ন ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস’ (ইনটাক)-এর অনুমোদিত অল ইন্ডিয়া লাইফ ইনশিয়োরেন্স এমপ্লয়িজ় ফেডারেশনের দাবি, বিমা সাধারণ মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প। বিশেষত যাঁরা সাধারণ রোজগার করেন। অথচ একে ব্যবসার জায়গা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশবাসীর স্বার্থেই এই প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। বিমা সংস্থায় যাতে ১০০% এফডিআইয়ের নীতি চালু না হতে পারে, তার জন্য আন্দোলনে নামবে তারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ভি নরসিংহ বলেন, “বিমা সংস্থাকে শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে চলবে না। বিদেশি লগ্নিকারীদের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে মুনাফা করা। সেই মুনাফার টাকা তারা বিদেশে নিয়ে চলে যাবে। এতে দেশের কোনও লাভ হবে না। বরং সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন সাধাণ মানুষ।’’ এ দিন কলকাতায় অনুষ্ঠিত ইনটাকের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রের ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে প্রস্তাব পাশ করেছে তারা। নরসিংহন জানান, উদ্যোগটি ঠেকাতে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
সিটু অনুমোদিত অল ইন্ডিয়া ইনশিয়োরেন্স এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মিশ্রেরও বক্তব্য, “বিমায় গ্রাহকেরা দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি করেন। সেই টাকা তাঁদেরই স্বার্থ রক্ষায় কাজে লাগে। জীবন বিমার একটা বড় অংশ যেমন দেশের পরিকাঠামো তৈরিতেও খরচ হয়। কিন্তু বিদেশি অর্থে তৈরি বিমা সংস্থার মালিকেরা মুনাফার টাকা বিদেশেই নিয়ে যাবে।’’