industrial sector

মূল্যবৃদ্ধির স্বস্তি কাড়ল শিল্পে ফের সঙ্কোচন

চাহিদার সঙ্কট বহাল থাকার ইঙ্গিত দিয়ে কমেছে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন। খনন সঙ্কুচিত ৭.৩%।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

নভেম্বরে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৬.৯৩%। এক ঝটকায় তা ডিসেম্বরে আগের বছরের তুলনায় নেমেছে ৪.৫৯ শতাংশে। ১৫ মাসে সব থেকে কম। চলতি অর্থবর্ষে এই প্রথম ৬ শতাংশের নীচে। মঙ্গলবার পরিসংখ্যান মন্ত্রক এই হিসেব দিয়ে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো গিয়েছে বলে দাবি করতেই ফের জোরালো হল সুদ ছাঁটাইয়ের আর্জি। কারণ, এ দিনই অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে আর এক সরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর নেতা-মন্ত্রীরা যতই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিন, শিল্পের অসুখ এখনও গভীর। কারণ, দু’মাস বৃদ্ধির পরে নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন ফের আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৯% কমেছে। জোর ধাক্কা খেয়েছে কল-কারখানায় (ম্যানুফ্যাকচারিং) উৎপাদন, মূলধনী পণ্য, এমনকি ভোগ্যপণ্যও।

Advertisement

সেপ্টেম্বরে শিল্প বৃদ্ধির হার ছিল ০.৫%, অক্টোবরে ৪.৯% (সংশোধিত)। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এর পরে আশা জেগেছিল, এ বার হয়তো ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরবে অর্থনীতি। কারণ, চাহিদা মাথা তুললে তবেই বাড়ে উৎপাদন। কিন্তু তাতে জল ঢালল নভেম্বরের সঙ্কোচন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ভয়টাই ছিল। বৃদ্ধির হার ধরে রাখা যাবে কি না। যে কারণে টানা কয়েক মাস উত্থান না-দেখা পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে নারাজ ছিলেন অনেকেই। এ দিন আবাসন শিল্পের উপদেষ্টা নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার গবেষণা বিভাগের প্রধান অর্থনীতিবিদ রজনী সিন্‌হার দাবি, সঙ্কোচন অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ, আগের দু’মাসে উৎপাদন বৃদ্ধির কারণ ছিল লকডাউনের সময়ে জমে থাকা ও উৎসবের মরসুমের চাহিদা।

খুচরো মূল্যবৃদ্ধি অবশ্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৪ শতাংশের (+/-২%) কাছাকাছি ফিরেছে। রজনী বলছেন, আনাজের (১০.৪১%) দাম কমাই মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টেনেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রত্যাশা মতো সুরাহা দিয়েছে শীতকালীন ফলন এবং সেগুলির সরবরাহ বৃদ্ধি। যে কারণে নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ৯.৫%, সেখানে ডিসেম্বরে তা নেমেছে ৩.৪১ শতাংশে। শিল্পের যুক্তি, ব্যবসায় প্রাণ ফেরাতে এ বার আর এক দফা সুদ ছাঁটাই জরুরি। মূল্যবৃদ্ধি তারই জমি পোক্ত করল। সুদ কমাতে তারা যে এই হারের দিকে তাকিয়ে, সেই বার্তা আগেই দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যদিও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কমার হার বহাল থাকা নিয়ে সংশয়ী একাংশ। অ্যাকুইট রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের সুমন চৌধুরীর মতো অনেকের দাবি, সুদ আরও কিছু দিন থমকেই থাকবে। কারণ, অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি বা বার্ড ফ্লুর মতো ঘটনা বাজারকে চাপে রাখতে পারে।

Advertisement

তবে উদ্বেগ বাড়িয়েছে নভেম্বরে কল-কারখানায় উৎপাদনের ফের ১.৭% কমা। আর্থিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসংস্থান বাড়াতে যে ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সব থেকে জরুরি মনে করা হয়। সেপ্টেম্বর, অক্টোবরে তা বেড়েছিল। দেশে লগ্নি ঢোকার অন্যতম মাপকাঠি মূলধনী পণ্য বা যন্ত্রপাতির উৎপাদনও কমেছে ৭.১%। এমনকি চাহিদার সঙ্কট বহাল থাকার ইঙ্গিত দিয়ে কমেছে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন। খনন সঙ্কুচিত ৭.৩%। এপ্রিল-নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন কমেছে ১৫.৫%।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement