ছবি: সংগৃহীত।
গ্রাহকদের বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন অধিকার নিয়ে আইন তৈরির জন্য সম্প্রতি খসড়া এনেছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। যা নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সচিবদের মত চেয়েছিল তারা। সূত্রের খবর, গ্রাহকের অধিকার নিয়ে কেন্দ্রের এই ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছে কমিশনগুলিকে নিয়ে গঠিত ফোরাম অব রেগুলেটর্স। তবে দেশ জুড়ে একই আইন প্রণয়নের ব্যাপারে তারা সরকারের সঙ্গে সহমত নয় বলে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে চিঠিতে জানিয়েছে ফোরাম। সূত্রের খবর, ফোরামের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে, বিদ্যুৎ নিয়ে এ ধরনের আইন কেন্দ্র একা আদৌ প্রণয়ন করতে পারে কি না। বিষয়টি রাজ্য বিদ্যুৎ কমিশনগুলির উপরে ছাড়া উচিত বলেও অনেকের মত।
খসড়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে নিয়মের সরলীকরণ, নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছনো, প্রিপেড বা স্মার্ট মিটার লাগানো, নেটে বিল জমার ব্যবস্থা, গ্রাহকদের অভিযোগ শোনার জন্য ‘গ্রিভান্স সেল’ তৈরি। বলা হয়েছে সারা দেশে একটি আইন হিসেবেই এই সমস্ত নিয়ম চালুর কথা।
ফোরামের দাবি, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিষেবা সংক্রান্ত এক আইন চালু করা সমস্যার। কারণ, রাজ্যগুলির ভৌগলিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান এক নয়। তা ছাড়া খসড়ায় যে সব বিষয় বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই সেগুলির কয়েকটি বিভিন্ন রাজ্যের কমিশন বণ্টন সংস্থাগুলিকে কার্যকর করার কথা বলেছে অথবা কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই নিয়ম চালুও হয়েছে। গ্রাহক অধিকার নিয়ে রাজ্য কমিশনগুলি যে পদক্ষেপ করছে, সেটাও স্পষ্ট করা হয়েছে চিঠিতে।
খসড়ায় প্রস্তাব
• গ্রাহকদের ন্যায্য অধিকার সুনিশ্চিত করতেই আনা হচ্ছে বিদ্যুৎ (গ্রাহকদের অধিকার) আইন, ২০২০। যা সারা দেশে চালু হবে।
• এতে সরল হবে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় নিয়ম।
• নির্দিষ্ট সময় বেঁধে পৌঁছনো হবে সংযোগ।
• থাকবে কার্ড, নেট, নগদে বিল জমার ব্যবস্থা, প্রিপেড বা স্মার্ট মিটার।
• গ্রাহক অভিযোগ শুনতে তৈরি হবে গ্রিভান্স সেল।
ফোরামের দাবি
• খসড়ায় বলা বহু পরিষেবা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে চালু আছে বা তা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
• রাজ্যগুলির ভৌগলিক এবং আর্থ-সামাজিক চরিত্র আলাদা।
• তাই সারা দেশে এ ধরনের একটিই আইন সমান ভাবে চালু করা সমস্যার।
• প্রয়োজনে কেন্দ্রের খসড়া অনুযায়ী কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরিমার্জন করতে পারে রাজ্য কমিশনগুলি।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের আবার বক্তব্য, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এ ভাবে একতরফা আইন প্রণয়ন করা যায় না। তাঁদের মতে, বরং রাজ্য কমিশনগুলি প্রয়োজন হলে ওই খসড়া অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের আগের নির্দেশিকা পরিমার্জন করার কথা ভাবতে পারে। সূত্রের খবর, ফোরামের পক্ষ থেকে চিঠিতে সে বার্তাও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিশনকে।