প্রতীকী ছবি।
চড়া মূল্যবৃদ্ধি ও টাকার দামে পতন জুন ত্রৈমাসিকেও ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলিকে সমস্যায় ফেলেছে বলে জানাল এই শিল্প। তাদের দাবি, অত্যাবশ্যক পণ্য কেনার পরে আমজনতার হাতে বাড়তি খরচের টাকা থাকছে না। বহু মানুষই ছোট প্যাকেট কিনছেন। ক্রয়ক্ষমতা ধাক্কা খাওয়ার সেই ছবি স্পষ্ট শহর ও গ্রামাঞ্চল, দু’জায়গাতেই। গ্রামে বিক্রি বৃদ্ধির হার শহরের চেয়ে কম। তার উপরে সংস্থাগুলি কাঁচামালের চড়া দর সামাল দিতে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, সেটাও প্রভাব ফেলছে মুনাফায়।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যখন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব জুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। এর জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ছাড়িয়েছিল ব্যারেলে ১৩৯ ডলার। এখন তা নেমেছে ১১০ ডলারে। পাল্লা দিয়ে শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল এবং অত্যাবশ্যক পণ্যের দামও মাথা তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারি থেকে দাম বাড়িয়েছে চা, কফি, বিস্কুট-সহ বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে সংস্থাগুলি।
ভোগ্যপণ্য সংস্থা ডাবরের মতে, এপ্রিল-জুনে চড়া দরের প্রভাব দেখা গিয়েছে চাহিদায়। শহর ও গ্রামে মানুষের হাতে বাড়তি মুদি-পণ্য কেনার মতো অর্থ থাকছে না। তার সঙ্গেই অশোধিত তেলের চড়া দর, ভোজ্য তেল, মধু-সহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম প্রভাব ফেলছে সংস্থাগুলির মুনাফায়। বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রেও চিন্তা থাকছে। এ সবের জেরে এপ্রিল-জুনে কার্যকরী মুনাফা গত অর্থবর্ষের এই সময়ের চেয়ে ২০০ বেসিস পয়েন্ট কম হবে বলে ধারণা। তবে সামগ্রিক ভাবে মুনাফার আশা করছে সংস্থা।
একই মতের শরিক গোদরেজ কনজ়িউমার প্রোডাক্টসও। তারা বলছে, মূল্যবৃদ্ধি যুঝতে দফায় দফায় পণ্যের দাম বাড়াতে হয়েছে। ফলে সংখ্যার বিচারে কমেছে তার বিক্রি। বিশেষত গ্রামের ছবিটা শহরের চেয়ে মলিন। চিন্তা থাকছে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও। আগামী দিনে নজর রাখতে হবে এর জেরে অশোধিত তেল ও ভোজ্য তেলের দামে কোথায় গিয়ে পৌঁছয়, তার দিকে। তা ছাড়া, বিদেশেও সংস্থা ব্যবসায় ধাক্কা খাওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে। মারিকো আবার জানাচ্ছে, মানুষ ছোট প্যাকেটের পণ্য কেনা পছন্দ করছেন বা ব্র্যান্ড বদলাচ্ছেন। ফলে দামের নিরিখে বেশি বিক্রি বৃদ্ধির হার হলেও, পরিস্থিতি আশাজনক নয়।
এই অবস্থায় হাল ফেরার আশায় দিন গুনছে ভোগ্যপণ্য শিল্প।