—প্রতীকী চিত্র।
গত ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, সেই সময় ভারতের মাথায় দেনার বোঝা ছিল ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৩-এ মোদী জমানার ন’বছর পরে সেই বোঝা বেড়ে কেন ২০৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস।
আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলেছে, চার-পাঁচ বছরের মাথায় ভারতের ঋণের বোঝা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র থেকে বেশি হয়ে যেতে পারে। ২০২৭-২৮ সালে ছাপিয়ে যেতে পারে জিডিপি-র ১০০%। এই সতর্কবার্তা নিয়ে আজ মোদী সরকারকে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘দেশে স্বাধীনতার পরের ৬৭ বছরে ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী মিলে মোট ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাই ১৫০ লক্ষ কোটি টাকা দেনা করে ফেলেছেন।’’
এই প্রশ্নের মুখে অর্থ মন্ত্রক অবশ্য বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, আইএমএফ যে মোট দেনার কথা বলেছে, তার মধ্যে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ধারও রয়েছে। তা ছাড়া, আইএমএফ সব থেকে খারাপ পরিস্থিতিতে ২০২৭-২৮ সালে দেনার পরিমাণ জিডিপি-র ১০০% ছুঁতে পারে বলে ভবিষ্যৎবাণী করেছে।
অর্থনীতি বলে, দেনা বাড়লে সরকারকে তা শোধ করতে বেশি অর্থ জোগাড় করতে হয়। চাপাতে হয় আরও কর। বাড়ে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা। অর্থনীতির ভিত দুর্বল হয়। সরকারের আয়ের সিংহভাগ ঋণ শোধে খরচ হয়ে যায়। আইএমএফের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে ভারতের ঘাড়ে ঋণের বোঝা ছিল জিডিপি-র ৭৫%। চলতি অর্থবর্ষে বেড়ে ৮২% ছুঁতে চলেছে। ২০২৭-২৮-এ ১০০% ছাপিয়ে যেতে পারে। তাদের হিসাব বলছে, ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের দেনা জিডিপি-র ৫২% থেকে বেড়ে ৫৮% ছুঁতে চলেছে।
অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মোট দেনার বেশির ভাগটাই টাকায় নেওয়া। বিদেশি ঋণ সামান্য। আইএমএফ জিডিপি-র ১০০% ছোঁয়ার যে কথা বলেছে, তা সব থেকে খারাপ পরিস্থিতিতে হতে পারে বলে জানিয়েছে। হবেই বলেনি। পরিস্থিতি ভাল হলে তার হার ৭০ শতাংশে নামতে পারে, এই বার্তাও দিয়েছে। মন্ত্রকের দাবি, কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে মোট সরকারি ঋণ ২০২০-২১ সালে ৮৮% ছিল। তা ২০২২-২৩ সালে ৮১ শতাংশে নামে। কেন্দ্র ২০২৫-২৬-এর মধ্যে রাজকোষ ঘাটতি ৪.৫ শতাংশে লক্ষ্যেও অবিচল।