কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। ফাইল ছবি।
আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চিনের যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফের মোদী সরকারকে আক্রমণ করল কংগ্রেস। বিরোধী দলটির অভিযোগ, গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির সঙ্গে এমন চিনা নাগরিকের যোগাযোগ রয়েছে, যাঁর ছেলেদের নাম রয়েছে পানামা পেপারে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে উত্তর কোরিয়াকে তেলের ট্যাঙ্কার ‘কোটি’ পাঠানোর। ২০১৭ সালে যা বাজেয়াপ্ত করে দক্ষিণ কোরিয়া। শুক্রবার কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, সরকারের কি এই গোষ্ঠীকে সাহায্য করা উচিত, নাকি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা উচিত?
পাশাপাশি, এ দিন আদানিদের আক্রমণ করে লোকসভায় তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের অভিযোগ, ‘‘যে সব সংস্থা ৩২০০ টাকা দরে আদানিদের শেয়ার কিনছিল, তারা এখন ১৪০০ টাকা দর দেখেও হাত গুটিয়ে কেন? কিছু তো গোলমাল নিশ্চয়ই রয়েছে।’’ আর আপের দাবি, ২০১৪ সালে কয়লা খনি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও বেআইনি ভাবে ছত্তীসগঢ়ে কয়লা খনি চালাচ্ছে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস। ২০১৫ সালে মোদী সরকারের আনা আইন অনুসারে, কোনও সংস্থা চাইলে রাজ্যের সঙ্গে মিলে খনি চালাতে পারে। কিন্তু তাতে রাজ্যের অংশীদারি হতে হবে ৭৪%। অথচ পার্সা এবং কেন্টে খনির ক্ষেত্রে আদানিদের হাতে রয়েছে সিংহভাগ অংশীদারি।
এই পরিস্থিতিতে ‘হম আদানি কে হ্যায় কৌন’ সিরিজ়ে রমেশের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠী অস্বীকার করলেও, বিনোদের সঙ্গে তাদের সংস্থাগুলির সম্পর্ক স্পষ্ট। তেমনই স্পষ্ট বিনোদের সঙ্গে চিনের নাগরিক চ্যাং চুং-লিং-এর যোগের কথাও। বেআইনিলেনদেন, গোপন সম্পদ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে ফাঁস হওয়া পানামা পেপারেনিষেধাজ্ঞা না-মেনে উত্তর কোরিয়াকে তেল সরবরাহের অভিযোগ ছিল চ্যাং, তাঁর দুই ছেলে ও তাঁদের সংস্থা কোটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞার তালিকাতেও রয়েছে ওই সংস্থা। এ দিকে চ্যাং আবার আদানিদের বিভিন্ন সংস্থায় ডিরেক্টর ছিলেন। এমনকি তিনি পিএমসি প্রোজেক্টসের মালিক, যারা আদানিদের মুন্দ্রা ও অন্য বন্দর তৈরিতে সাহায্য করেছিল। সাইপ্রাসের নাগরিক হলে বিনোদের ভারতের পাসপোর্ট কী করে থাকে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস।
রমেশের প্রশ্ন, ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর দায়িত্ব রয়েছে আদানিদের কাঁধে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও। সেই গোষ্ঠীর উপরে চিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রভাব কতটা? প্রধানমন্ত্রী দেশের সম্পদকে বিপদে ফেলছেন কেন? কেন গোষ্ঠীর সঙ্গে বেআইনি কাজে যুক্ত চিনা ব্যক্তির যোগ রয়েছে? তাঁর দাবি, যৌথ সংসদীয় কমিটিই উত্তর খুঁজতে পারে।