—প্রতীকী চিত্র।
মোদী সরকারের তৃতীয় দফার প্রথম ১০০ দিনের মাথায় ফের কাজের বাজার নিয়ে সরব হল বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের অভিযোগ, রিপোর্ট কার্ডে এখনও লাল দাগ কর্মসংস্থানের নম্বরে। তারা লাগাতার সতর্ক করা সত্ত্বেও তাতে কান দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফলে তাঁর আমলে বেকারত্ব নজিরবিহীন মাত্রায় বেড়েছে।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘অজৈবিক প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর হয়ে ঢাক পেটানো অর্থনীতিবিদেরা কাজহীন (জবলেস) আর্থিক বৃদ্ধির অভিযোগকে নাগাড়ে আক্রমণ করে চলেছেন। কিন্তু বাস্তবে ২০১৪ সাল থেকে যেটা দেখা যাচ্ছে, তা এই নিয়োগহীন আর্থিক বৃদ্ধির থেকেও ভয়ানক। সেটা হল, কাজ হারানো (জবলস) আর্থিক বৃদ্ধি।’’ তাঁর দাবি, তৃতীয় দফার মোদী সরকারের প্রথম ১০০ দিনের শেষে যে বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত সেটা হল, সরকারি স্তরে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরে তা ফেরানো এবং একগুচ্ছ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়াই এই তাদের বিশেষত্ব। পাশাপাশি দেশের বিশাল বেকারত্বের সমস্যা মোকাবিলা করতে তারা ব্যর্থ।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বেকারত্বের এই সমস্যা কেন্দ্রের নিজেরই তৈরি। প্রথমত, সব থেকে বেশি কর্মসংস্থান হয় যে শিল্পে, সেই ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির (এমএসএমই) সর্বনাশ ডেকে এনেছে মোদী সরকারের নোটবন্দির মতো ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্ত। তাদের ক্ষতি করেছে তাড়াহুড়ো করে চালু করা জিএসটি, অতিমারির সময় পরিকল্পনাহীন ভাবে লকডাউন চাপিয়ে দেওয়া এবং চিন থেকে আমদানি বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি। বড় শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য কেন্দ্রের আর্থিক নীতিও ছোট শিল্পের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়েছে। যার নিট ফল হিসাবে ২০১৯-২০২২ সালের মধ্যে দেশে বেকারত্ব ৪২% থেকে বেড়ে রেকর্ড ৪৫.৪ শতাংশে উঠেছে। বর্তমানে স্নাতক বেকারদের হার ৪২%।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) ২০২৪ সালের রিপোর্টের তথ্য উল্লেখ করে রমেশ বলেছেন, প্রতি বছর ৭০-৮০ লক্ষ প্রার্থী কাজ খুঁজতে বেরোচ্ছেন। কিন্তু ২০১২-২০১৯ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান বেড়েছে ০.০১%। সিটিগ্রুপের রিপোর্ট বলছে, সকলকে কাজ দিতে হলে বছরে ১.২ কোটি চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
নিয়মিত বেতন মেলে, এমন চাকরি ক্রমশ কমছে বলেও দাবি করেছেন বিরোধীরা। রমেশ বলেন, ‘‘আইএলও-র রিপোর্টই জানাচ্ছে, মোদী সরকার অসংগঠিত ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষার সুবিধাহীন অতি কম মজুরির কাজের সংখ্যা বাড়িয়েছে। অন্য দিকে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ২০১৯-২০২১ সালের মধ্যে ১০.৫% থেকে কমে হয়েছে ৯.৭%। সিটিগ্রুপও বলেছে, মাত্র ২১% কর্মী বেতনভুক।’’