—প্রতীকী চিত্র।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার উপরে একাধিক আর্থিক অবরোধ চাপিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশ। তার ফলে ভারত সস্তায় রুশ তেলের আমদানি বাড়ালেও ডলার বা ইউরোয় দাম মেটাতে সমস্যায় পড়ছে। সূত্রের খবর, সেই সমস্যাকে পাশ কাটাতে জুন থেকে বিভিন্ন ভারতীয় তেল সংস্থা চিনা মুদ্রা ইউয়ানে ওই অশোধিত তেলের দাম মিটিয়েছে। মঙ্গলবার তা নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা চলাকালীন তাদের মুদ্রাকে শক্তিশালী করে চলেছে মোদী সরকার।
রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞার ফলে সারা বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। একটা সময়ে ভারতের আমদানিকৃত তেলে রাশিয়ার ভাগ ১ শতাংশের কম থাকলেও তা বাড়তে বাড়তে এখন ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। কম দামে সেই তেল কিনছে ভারতের সংস্থাগুলি। কমেছে ইরাক ও সৌদি আরবের তেলের ভাগ। তেলের দাম যাতে রাশিয়া ভারতীয় মুদ্রায় নেয় তার জন্যও উদ্যোগী হয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু দীর্ঘ কথাবার্তা সত্ত্বেও মস্কো রাজি হয়নি। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় জুনে প্রথম বার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে রাশিয়ার তেলের দাম ইউয়ানে মেটায় রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্ডিয়ান অয়েল। তার পরে একাধিক বার সেই পদক্ষেপ করেছে তারা। দু’টি বেসরকারি সংস্থাও একই পথে হেঁটেছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মুদ্রা দিরহামেও দাম মিটিয়েছে তারা। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, চিনও রুশ তেলের দাম নিজেদের মুদ্রায় মেটাচ্ছে। ফলে রাশিয়ার আর্থিক ব্যবস্থায় সেই মুদ্রার গুরুত্ব বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে কোনও পক্ষই অবশ্য মন্তব্য করেনি।
এই ঘটনাকে ঘিরেই মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। টুইটে তাঁর বক্তব্য, ‘‘চিনের ত্রয়োদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তাদের মুদ্রার আন্তর্জাতিকরণের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাদের লক্ষ্য আমেরিকার ডলারকে স্থানচ্যূত করা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, ভারত ও চিন যখন সেনা সংঘর্ষে জড়াচ্ছে এবং চিনের সেনা যখন প্রকৃত সীমারেখার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে আমাদের বাধা দিয়ে চলেছে, তখন রাশিয়ার তেলের দাম ইউয়ানে মিটিয়ে মোদী সরকার চিনের সরকারের লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করছে কেন।’’ একই সময়ে যে চিন থেকে ভারতের আমদানির অঙ্ক ৯৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছে নজির তৈরি করেছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি যে ৮৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।