মাধবী পুরী বুচ। —ফাইল চিত্র।
সেবি চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ। বৃহস্পতিবার তাঁর সম্পর্কে নতুন অভিযোগ তুলে সেই প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের পুত্র শৌর্যের নাম টেনে আনল কংগ্রেস। এ দিন সেবির দফতরে মাধবীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কর্মীরা!
বাজার নিয়ন্ত্রকের শীর্ষে থাকাকালীনই মাধবীর বিরুদ্ধে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘সম্পর্কিত’ বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার ইউনিটহোল্ডার এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের লাভজনক পদে থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ বার এক সংবাদমাধ্যমের খবর উল্লেখ করে কংগ্রেসের বক্তব্য, আইসিআইসিআইয়ে থাকার সময়ে বেসরকারি লগ্নি সংস্থা গ্রেটার প্যাসিফিক ক্যাপিটালের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মাধবী। বিরোধী দলের বক্তব্য, এই সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন শৌর্য। এই দু’জন হয়তো আর্থিক পেশাদার হিসেবেই সেখানে ছিলেন। কিন্তু মাধবীর বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ বাড়ছে। সে কারণে জাতীয় স্বার্থেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত। না হলে ভারতীয় শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা সম্পর্কে লগ্নিকারীদের মনে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়। বিশেষ করে বিদেশি লগ্নিকারীদের। এ দিন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রশ্ন, ‘‘মাধবী পুরী বুচের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রক নিশ্চুপ কেন? আসলে তাঁর পতন হলে প্রমাণিত হবে, আদানিদের ক্নিনচিট দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা।’’
এ দিন কংগ্রেসের তথ্য বিশ্লেষণ শাখার চেয়ারপার্সন প্রবীণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেবির আলমারি থেকে একের পর এক কঙ্কাল বেরোচ্ছে। গত ১০ অগস্ট একটি বিদেশি সংস্থা বিদেশি ফান্ডের ব্যাপারে সেবি চেয়ারপার্সন এবং তাঁর পরিবারের ব্যাপারে অভিযোগ করেছিল। কোনও রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেনি। অথচ দেখা গেল তা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সদস্য বিবৃতি দিলেন। এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের উত্তর সরকার দিচ্ছে কেন?’’ তিনি জানান, সেবির ৫০০ জন অফিসার ভারত সরকারের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছেন, মাধবীর অধীনে কাজের পরিবেশ বিষাক্ত, অপমানজনক এবং ভীতিপ্রদ হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে স্বার্থের সংঘাতের নতুন অভিযোগ, আইসিআইসিআইতে থাকাকালীন একইসঙ্গে দু’টি কাজ করেছেন মাধবী। যেখানে কিনা যুক্ত ছিলেন অজিত ডোভালের পুত্রও।
আর্থিক ক্ষেত্রের প্রাক্তন পেশাদার চক্রবর্তী দাবি করেছেন, বহু বিদেশি লগ্নিকারী তাঁকে ফোন করে সেবির অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। প্রশ্ন করছেন, কেন বাজার নিয়ন্ত্রক সম্পর্কে এমন অভিযোগ উঠছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের শেয়ার বাজারে বিদেশি লগ্নি প্রয়োজন। জাতীয় স্বার্থেই তা দরকার। এখন প্রশ্ন, কাকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে? মাধবী পুরী বুচের ব্যাপারে ইডি কেন নীরব? জাতীয় স্বার্থেই কি তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত নয়?’’ তিনি জানান, বহু মানুষ তথ্য নিয়ে আসছেন। সংবাদমাধ্যমগুলি তদন্ত করছে। একটি নির্দিষ্ট পোর্টালের নাম করে সেখানে তথ্য দেওয়ার জন্য সকলকে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।