Sale of Apartments

ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রি নিয়ে চিন্তা, বাদ নয় কলকাতাও

নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী, দিল্লি ও রাজধানী অঞ্চল, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, পুণে, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ, চেন্নাই ও কলকাতায় গত জানুয়ারি-মার্চে মোট ৭৯,১২৬টি ফ্ল্যাট বিকিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩৬
Share:

বিক্রি এবং নতুন প্রকল্পের নিরিখে ধাক্কা খেয়েছে কলকাতার বাজারও। ফাইল চিত্র।

নির্মাণ সামগ্রীর দাম চড়ায় বছরখানেক ধরে ঊর্ধ্বমুখী ফ্ল্যাট-বাড়ির মূল্য। তা সত্ত্বেও অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর দাবি করেছিল আবাসন ক্ষেত্র। কিন্তু বাজারের পরিস্থিতিতে ফের সিঁদুরে মেঘেরই ইঙ্গিত। উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের পরিসংখ্যান জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ, এই তিন মাসে তার আগের তিন মাসের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তুলনায় দেশে আবাসন বিক্রি সামান্য হলেও কমে গিয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি-মার্চের সঙ্গে তুলনা করলে, এ বার ওই তিন মাসে বিক্রি বেড়েছে বটে। তবে তার হার নামমাত্র। বিক্রি এবং নতুন প্রকল্পের নিরিখে ধাক্কা খেয়েছে কলকাতার বাজারও।

Advertisement

শুধু তা-ই নয়, সমীক্ষা অনুযায়ী দেশে ভাটা শুধুমাত্র তুলনায় কম দামের বাড়ি বিক্রিতে। ৫০ লক্ষ টাকার বেশি দামগুলির বাজার রমরমা।

চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে গত বছরের মে মাস থেকে মোট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। ফলে গত প্রায় এক বছর ধরে লাগাতার বেড়েছে গৃহ ঋণে সুদের হার। ক্রেতাদের ঋণ শোধের মাসিক কিস্তির (ইএমআই) বোঝা ক্রমশ ভারী হয়েছে। ফ্ল্যাট-বাড়ির ব্যবসা ঝিমিয়ে পড়ার এই রিপোর্ট যখন সামনে এসেছে, তখন শিল্প মহলের উদ্বেগ বাড়ছে আগামী দিনে ধাক্কা আরও জোরালো হবে কি না, সেই প্রশ্নে। কারণ, সোমবার থেকে শুরু হয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক। আজ জানা যাবে সুদ নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত। গত সপ্তাহে এই দফায় সুদ না বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিল আবাসন শিল্পের সংগঠন ক্রেডাই। তাদের একাংশের মতে, শেষ পর্যন্ত সুদের হার বাড়লে আরও কমতে পারে ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদা। ফলে বিক্রি নিয়ে চিন্তা থাকছেই।

Advertisement

নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী, দিল্লি ও রাজধানী অঞ্চল, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, পুণে, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ, চেন্নাই ও কলকাতায় গত জানুয়ারি-মার্চে মোট ৭৯,১২৬টি ফ্ল্যাট বিকিয়েছে। যা ২০২২ সালের ওই ত্রৈমাসিকের তুলনায় মাত্র ১% বেশি। আর বিক্রি ১১০০টিরও বেশি কম গত অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের তুলনায়। ওই আট শহরে নতুন প্রকল্পের সংখ্যাও কমেছে দশ হাজারের বেশি।

কলকাতার ছবিটা কেমন? জানুয়ারি-মার্চের হিসাবে ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩-এ বিক্রি কমেছে ৩%। নতুন প্রকল্প ৮% কম। তবে দাম গড়ে ১% বেড়েছে। সমীক্ষা বলছে, আগের বছরের চেয়ে ২০২৩-এর জানুয়ারি মার্চে বাকি শহরগুলিতেও প্রতি বর্গ ফুটের হিসাবে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে বেশ খানিকটা। সর্বাধিক বেঙ্গালুরুতে (৭%)। তার পরে মুম্বই (৬%), চেন্নাই, হায়দরাবাদ (৫%), পুণে (৪%), দিল্লি, আমদাবাদ (৩%)।

নাইট ফ্র্যাঙ্কের সিএমডি শিশির বৈজল এবং গবেষণা বিভাগের ডিরেক্টর বিবেক রাঠির অবশ্য দাবি, দাম বাড়লেও বিক্রিবাটার নিরিখে আবাসন শিল্প যথেষ্ট মজবুত। নিজের ফ্ল্যাট কেনার আগ্রহে কোনও খামতি নেই। তবে একই সঙ্গে বিবেক বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে বর্ধিত দাম এবং চড়া সুদের হার, বিশেষ করে কম খরচের ফ্ল্যাট-বাড়িগুলির ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতায় চাপ তৈরি করছে। যে কারণে তাঁদের সমীক্ষাও বলছে, ৫০ লক্ষ টাকার কম দামি ফ্ল্যাটের বিক্রি ২০২২-এর চেয়ে এ বারের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে ৪১% থেকে নেমেছে ৩২ শতাংশে। কিন্তু ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার ফ্ল্যাটের বিক্রি ৩৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮%। আর ১ কোটি টাকার বেশি দামির বিক্রি ২৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ২৯%। দাম বৃদ্ধি ও অতিমারির প্রভাব যে কম দামি ফ্ল্যাটের ক্রেতার উপরে বেশি প্রভাব ফেলেছে তা স্পষ্ট, বলছে উপদেষ্টা সংস্থাটিই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement