—প্রতীকী চিত্র।
ধনতেরসের পরে লাগাতার উত্থানে রেকর্ড গড়েছিল সোনার দাম। গত কয়েক দিনে তা কিছুটা নামলেও, এই সপ্তাহে তা ফের ঊর্ধ্বমুখী। শনিবার জিএসটি বাদে কলকাতায় ১০ গ্রাম (২৪ ক্যারাট) খুচরো পাকা সোনা হয়েছে ৬৩,৬৫০ টাকা। সোনার বাট ৬৩,৩৫০ টাকা। এই অবস্থায় চলতি অর্থবর্ষে গয়না বিক্রি বৃদ্ধির হার কমবে বলে মনে করে মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রা। তাদের মতে, তা বাড়তে পারে ১০%-১২%। গত বছর ওই হার ছিল ১৫%। তবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বড়দিনে বিক্রি প্রতি বছরই কম থাকে। পরে ফের তা মাথা তোলে। আপাতত তারই অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
গত ২ ডিসেম্বর কলকাতায় খুচরো পাকা সোনার দাম কর বাদে ৬৪,২০০ টাকায় উঠে নজির গড়েছিল। ইক্রা জানিয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দর দ্রুত ওঠানামা করেছে। তার পর থেকে চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধ পর্যন্ত দামে স্থিতিশীলতা ছিল। কিন্তু এখন ফের অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। যা চলতে থাকলে দ্বিতীয়ার্ধে গয়নার বিক্রি বৃদ্ধির হার ঘোরাফেরা করবে ৬%-৮%।
স্বর্ণ শিল্প মহলের দাবি, অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে গয়নার কাটতি বেশ ভালই ছিল। এমনকি ধনতেরসেও বাজার চাঙ্গা ছিল। কিন্তু তার পরে দাম হু হু করে বাড়তে থাকায় চাহিদায় ভাটা দেখা যাচ্ছে। যদিও ২০২৩-২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে সে ভাবে দরে দোলাচল দেখা যাবে না বলেই মনে করেন গয়না ব্যবসায়ীরা। প্রসঙ্গত, ভারতে সোনার দাম ওঠানামা করে মূলত বিশ্ব বাজারের উপরে ভিত্তি করে। কলকাতার গরানহাটার পাইকারি গয়না ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন পাঁজা বলেন, “ইউরোপ, আমেরিকায় বড়দিনের ছুটি শুরু হবে। সেখানকার বাজারও বন্ধ থাকবে। তাই বর্তমান দামই মোটামুটি ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে ধারণা।’’ তবে তার পরে দর অনেকটাই বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।
গয়না ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, প্রতি বছরই ডিসেম্বরের শেষ দিকে চাহিদা কমে। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে জানান, “এখন পৌষ মাস চলছে। সাধারণত এই মাসে বিয়ে হয় না বললেই চলে। তা ছাড়া বড়দিনের সময়ে বিক্রি কমই হয়।’’ বনগাঁর গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহের আবার বক্তব্য, “বিয়ে না থাকলেও অনেকেই শখে গয়না কেনেন। আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের মোট বিক্রির অর্ধেক জুড়ে থাকে এ ধরনের গয়না। দাম এতটা বাড়ায় তা অনেকটাই নেমেছে।’’ আর সেই কারণেই ব্যবসায়ীরা এখন ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা পরবর্তী বিয়ের মরসুমের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বলে জানাচ্ছেন তিনি।